এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবোঃ বর্তমান সময়ে অনলাইন সেক্টরে অল্প সময়ে অধিক টাকা ইনকামের সবচেয়ে ডিমান্ডেবল মাধ্যম হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর নাম এখন ৯৯% মানুষ জানেন। তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে? Affiliate Marketing কিভাবে কোথায় থেকে শুরু করতে হয়? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কোন কোন টিপস গুলো সম্পর্কে জানাটা অধিক বেশি জরুরী– অনেকেরই এ সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই।
তাই স্বাভাবিকভাবেই– এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো? এ প্রশ্নটি সকলের মনেই এসে থাকে। তো আপনি কি অনলাইনে ইনকাম করতে চান? ভবিষ্যতে এফিলিয়েট মার্কেটিং এ নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলার কথা ভাবছেন? যদি আপনার উত্তর হয়ে থাকে “হ্যাঁ” তাহলে বলবো এফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে আমাদের আজকের এই আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়ুন।
কেননা আজকের এই প্রবন্ধে আমরা অ্যাফিনেট মার্কেটিং এর খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করব। আশাকরি আসলে মার্কেটিং করে কিভাবে আয় করা যায়, কোথায় থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শেখা যায় এবং কিভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং এ কাজ করে ইনকাম করা যায় হিউজ পরিমাণ টাকা সে সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেল আপনাদের অনেকটাই উপকারে আসবে এবং আপনারা আমাদের আজকের বিষয়বস্তুগুলো পড়ে এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা অর্জন করতে পারবেন। তাহলে আসুন শুরু করি।
এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব- এ সম্পর্কে জানার পূর্বে আগে আপনাকে জানতে হবে এফিলিয়েট মার্কেটিং কি, এফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে। আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান তাহলে আপনাকে কোন কোন বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে এবং মার্কেটিং এর কি কি বিষয় সম্পর্কে অধীন বেশি জানতে হবে এগুলো সম্পর্কে পূর্বেই ধারণা অর্জন করাটা খুব বেশি জরুরী।
তাহলে চলুন ধারাবাহিকভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেই। আজকের আলোচনায় আপনি যা যা পাবেন:
- অ্যফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা কি
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবেন
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সাইট সমূহের নাম
- আফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টিউটোরিয়াল
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোর্স
- মোবাইল দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার সহজ ও কার্যকরী উপায়
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম
এফিলিয়েট মার্কেটিং কি?
এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কোন প্রোডাক্ট অথবা কোন সেবা বিক্রি করে দেওয়া এবং প্রত্যেকটি প্রোডাক্ট বিক্রি করার বিপরীতে বিক্রয়ের মূল্যের উপর নির্ধারিত হারে কমিশন গ্রহণ করা। মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কমিশন নির্ভর একটি বিজনেস আইডিয়া। যেখানে আপনি অন্য কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন গ্রহণ করতে পারবেন। এই সিস্টেমে তিন ধরনের পার্টি থেকে থাকে এফিলিয়েট মার্কেটিং এ। সেগুলো হলো:
- একজন মার্চেন্ট বা বিজ্ঞাপনদাতা
- একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটের
- একজন কাস্টমার
মূলত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি অধিক বেশি সম্ভাবনাময় স্থানে পৌঁছবেন তখন যখন আপনার ট্রাফিক বা ভিজিটরের সংখ্যা বেশি থাকবে এবং যত বেশি প্রোডাক্ট সেল হবে আপনার এফিলিয়েট ওয়েবসাইট থেকে।
সুতরাং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো একটি ভিন্ন রকম মার্কেটিং উপায়, যে প্রক্রিয়ায় মানুষ অন্য কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট সমূহ বিক্রি করার মাধ্যমে কমিশন হিসেবে নিজের পারিশ্রমিক গ্রহণ করে থাকে। বর্তমানে অনলাইনে অসংখ্য এফিলিয়েট নেটওয়ার্ক রয়েছে যা ব্যবহার করে বহিরাগত ওয়েবসাইটের সূত্রে কোন পূর্ণ বাসে বা বিক্রি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ইনকাম জেনারেট করা সম্ভব। আর এই ইনকাম মূলত সেলস এর পরিমাণ এবং সেলস করা প্রোডাক্টের প্রাইজের উপর ডিপেন্ড করে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি?
এফিলিয়েট মার্কেটিং এর নির্দিষ্ট কোন প্রকারভেদ নেই। কেননা বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ওয়েবসাইট রয়েছে। মূলত বেশ কয়েকটি মাধ্যমে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন। তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যম গুলো আমরা এ পর্যায়ে আপনাদেরকে জানাবো। যথা:
- ফেসবুক মার্কেটিং
- সিপিএ মার্কেটিং
- ইমেইল মার্কেটিং
- ইউটিউব মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাকে বলে, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রকারভেদ বা ধরন সম্পর্কে ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি। এ পর্যায়ে জানবো এফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত কিভাবে কাজ করে? সুতরাং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর কাজ কি?
এ ব্যাপারে বলতে গেলে বলা যায় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য পণ্য বা সেবা তিন রকমের হয়ে থাকে এবং এটি তিন ভাবে কাজ করে। যেহেতু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মানে হল অন্য কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বিক্রি করে কমিশন হিসেবে সে প্রোডাক্টের কিছু অংশ নিজে গ্রহণ করা, তাই পণ্য বা সেবা অবশ্যই কয়েক রকমের হবে। আর সেগুলো হলো:
- ডিজিটাল প্রোডাক্ট
- ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট
- লিড জেনারেশন
সুতরাং আপনি আসিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন ডিজিটাল প্রোডাক্ট, ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট এবং লিড জেনারেশন এর মাধ্যমে। এবার চলুন ধারাবাহিকভাবে এই তিনটি মাধ্যম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট
ডিজিটাল পণ্য বলতে সেই সকল প্রোডাক্ট কে বোঝানো হয় যে সকল পণ্যে সাদৃশ্য নয়। সুতরাং ভার্চুয়ালি ব্যবহার করতে হয় এমন ধরনের পণ্যই হচ্ছে ডিজিটাল প্রোডাক্ট। যেমন:
- E-book
- ওয়েব হোস্টিং
- সফটওয়্যার
- ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন
- অনলাইন ক্লাস প্রভৃতি।
যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান এবং অ্যাসিলিয়েট মার্কেটিং কে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চান তারা মূলত ডিজিটাল প্রোডাক্ট অধিক বেশি নির্বাচন করে থাকেন আর এটাই অনেক বেশি জনপ্রিয়। কেননা ডিজিটাল পূণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৭০% পর্যন্ত কমিশন গ্রহণ করা সম্ভব।
ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য যে তিন রকমের প্রোডাক্ট সার্ভিস এর ব্যবস্থা রয়েছে তার মধ্যে দ্বিতীয়টি হচ্ছে ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট। অর্থাৎ যে সমস্ত প্রোডাক্টগুলো আমরা দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করে থাকি। যেমন ধরুন:
- ইলেকট্রিক পণ্য
- বিভিন্ন ফার্নিচার
- পোশাক আশাক
- ফলমূল
- বিভিন্ন খাবার প্রভৃতি।
এই ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট নিয়ে এফিলেট মার্কেটিং করলে মূলত দুই থেকে শুরু করে ২০% পর্যন্ত কমিশন পাওয়া সম্ভব হয়। আর মনে রাখবেন, আপনি যদি ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট গুলো নিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাহলে অবশ্যই ডেলিভারির কথা মাথায় রাখতে হবে। কেননা আপনি যে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন তারা ঠিকমতো ডেলিভারি দিচ্ছে কিনা এ সমস্ত ব্যাপারে আপনাকে অবশ্যই পূর্বে রিসার্চ করার মাধ্যমে জানতে হবে পরবর্তীতে নামতে হবে মার্কেটিং এ।
লিড জেনারেশন
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হচ্ছে লিড জেনারেশন অর্থাৎ আপনি শুধুমাত্র তাদের প্রোডাক্ট এর জন্য মার্কেটিং করবেন অথচ আপনার ক্রেতাদের ক্রেডিট বা টাকা খরচ করে কোন পণ্য কিনতে হবে না তবুও আপনি কমিশন পাবেন। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে:
- Email subscription
- অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস সাইন আপ
- চ্যানেল সাবস্ক্রাইব
- অ্যাপস ডাউনলোড ইনস্টল
- ভিডিও ভিউজ প্রভৃতি
সুতরাং এটি মূলত এমন একটি কাজ যেটা শুধুমাত্র আপনার ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে কিন্তু তারা সেটি কিনলো কিনা তার উপর ডিপেন্ড করে আপনার ইনকাম নির্ধারণ করা হচ্ছে না। বরং আপনি নতুন ইউজারস নিয়ে আসতে পারলে কমিশন হিসেবে তাদের কাছ থেকে আপনি আপনার নির্ধারিত টাকা জমা করতে পারছেন একাউন্টে। এই মার্কেটিং পলিসিটাকে মূলত সিপিএ মার্কেটিং বলা হয়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবেন?
অ্যাসিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবেন? অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করলে আপনার কি লাভ হবে, এর সুবিধা হিসেবে আপনি কি কি ভোগ করতে পারবেন নিশ্চয়ই এমন প্রশ্ন আপনার মাথায় আসে! কি তাইতো? যদি আপনার উত্তর হয়ে থাকে হ্যাঁ তাহলে বলবো কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন এ সম্পর্কে জানতে নিচের পয়েন্ট গুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন। কেননা এই পেশার কিছু নিজস্বতা রয়েছে যার জন্য এটি অনলাইনের অন্যান্য কাছ থেকে একটু ডিফারেন্ট এবং অনেক বেশি ডিমান্ডেবল।
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার কারণ:
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে অন্যের পণ্য বিক্রি করে আয় করা যায়।
- ফুল টাইম ক্যারিয়ার হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
- এই কাজে নিজের স্বাধীনতা রয়েছে
- কাজ টি ঘরে বসে নিজের ইচ্ছামতো করা যায়
- পছন্দমত পণ্য ওয়েবসাইটে দেওয়া যায়
- বিভিন্ন কোম্পানির কাছে যথেষ্ট ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানো যায়।
- সব সময় ওয়েবসাইটে একটিভ থাকার প্রয়োজন পড়ে না
- একটি মাত্র অ্যফিলিয়েট সাইট থেকে একাধিক উপায়ে ইনকাম করা যায়
- আফিলিয়েট মার্কেটিং এ স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ ভোগ করা যায়
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয় ক্রিয়েটিভ ও স্মার্ট পেশা এফিলিয়েট মার্কেটিং, যা আলাদা একটা পরিচিতি বহন করে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয় রয়েছে। সুতরাং আপনি যদি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হতে চান তাহলে তিনটি বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে কেননা এই তিনটি বিষয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই তিন মাধ্যম হলো:
- সময়
- কৌশল এবং
- বিনিয়োগ
আপনি যদি কাজ করার সঙ্গে সঙ্গে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই এফিলেন্ট মার্কেটিং এর সফল হওয়া সম্ভব হবে না। কেননা অনলাইন সেক্টরে এই মাধ্যমটিকে নিজের পেশা হিসেবে নিতে চাইলে শুরুতে আপনাকে প্রচুর সময় দিতে হবে। কারণ এফফিলিয়েট মার্কেটিং একটি মাল্টি বিলিয়ন ইন্ডাস্ট্রি। একদিকে প্রতিযোগিতা অন্যদিকে প্রযুক্তির আপডেট উভয় মিলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকাটা খুবই জরুরী।
সেই সাথে মার্কেটিং কৌশল সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে এবং আপনাকে একজন ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের মানুষ হতে হবে। যেহেতু এটি মাল্টি বিলিয়ন ইন্ডাস্ট্রি এবং এতে প্রতিযোগিদের সংখ্যাও অধিক বেশি, তাই অবশ্যই আপনাকে কৌশলী হতে হবে এবং আপনার সৃজনশীল মনোবৃত্তি থাকতে হবে। মূলত অনলাইনের এই মাধ্যমে দ্রুত সফল হওয়ার জন্য যে যত বেশি কৌশলী সে তত সুন্দরভাবে তার অফার প্রমোট করতে পারবে তার কাস্টমারদের সাথে।
মূলত এই জন্য একদিকে যেমন আপনাকে বিজনেস আপ টু ডেট থাকতে হবে অন্যদিকে নির্দিষ্ট অডিয়াস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ রেসপন্স পাবার জন্য সু কৌশলী হতে হবে। পাশাপাশি বিনিয়োগের বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে। কেননা আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন তাহলে সফলতা অতি তাড়াতাড়ি না আসলেও খুব বেশি দেরি হবে না।
তাই অফিলিয়েট মার্কেটিং এ পা রাখার পূর্বে কিছু মেথড শিখে নিন এবং নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতাকে আরো বেশি যাচাই-বাছাই করুন। হাতে পর্যাপ্ত সময় রাখুন অতিরিক্ত পরিশ্রম করার মন-মানসিকতা তৈরি করুন। আশা করা যায় এই মালটি বিলিয়ন ইন্ডাস্ট্রিতে আপনিও একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
অ্যফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবেন?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে আমরা অনেকটাই জেনেছি। তবে এখন কথা হচ্ছে আপনি যদি এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ কি কি করতে হবে? তাহলে আসুন ধারাবাহিকভাবে সে বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হওয়া যাক।
প্রথমত: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইলে আপনাকে নিশ বাছাই করতে হবে। সুতরাং আপনি কোন জিনিস নিয়ে কাজ করবেন পূর্বে তা নির্ধারণ করুন।
দ্বিতীয়তঃ ওয়েবসাইট সেটাপ করতে হবে প্রোডাক্ট বাছাই করে। অর্থাৎ আপনি নিজ বাছাই করার পর আপনার ওয়েবসাইটে কোন কোন বা কেমন ধরনের প্রোডাক্ট প্রমোট করবেন সেই সকল বিষয় ওয়েবসাইটে সেটআপ করতে হবে।
তৃতীয়ত: ওয়েবসাইট র্যাঙ্ক করাতে হবে সুতরাং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করার মাধ্যমে আপনার সেই সেটআপকৃত ওয়েবসাইট টিকে রেংকিংয়ে নিয়ে আসতে হবে।
চতুর্থত: কনটেন্ট তৈরি করে সাইটে ভিজিটর নিয়ে আসতে হবে। যেহেতু এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে মূলত প্রোডাক্ট সেল করা হয় তাই ভিজিটর আসলে তবেই আপনি আপনার সেই প্রোডাক্ট গুলো বিক্রি করতে পারবেন এবং কমিশন হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন আপনার নির্ধারণযোগ্য টাকা।
পঞ্চমত: অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করতে হবে। কেননা প্রডাক্ট প্রমোট করার মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুত সেগুলো ইউজার্সদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন এবং আপনার প্রোডাক্ট সেল বৃদ্ধি পেলে আপনার ইনকাম ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে বেশি টাকা ইনকামের কার্যকরী উপায়
আপনি যদি বেশি আয় করার জন্য খুব ভালোভাবে মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনাকে মূলত কয়েকটি বিষয়ের দিকে খুব নজর দিতে হবে। সুতরাং এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে বা এই কৌশল গুলো অবলম্বন করলে আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে হিউজ পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সেগুলো হলো:
- সঠিক পণ্য নির্বাচন করা
- সঠিক কোম্পানি বা ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচন করা
- আপডেট মার্কেটিং পদ্ধতি সম্পর্কে এনালাইসিস করা
- ওয়েবসাইট তৈরি ও এসইও সম্পর্কে নলেজ থাকা
- ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা
- Social signal এর প্রতি খেয়াল রাখা
- জনপ্রিয় বেশ কিছু অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা।
যেহেতু এখানে কম্পিটিটরের সংখ্যা অধিক বেশি তাই অবশ্যই আপনাকে অনেক বেশি পরিশ্রমী, বুদ্ধিমান এবং রিসার্চ করার মন মানসিকতা সম্পন্ন হতে হবে।
জনপ্রিয় এফিলিয়েট প্রোগ্রাম কোনগুলো?
বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় এফিলিয়েট প্রোগ্রাম রয়েছে, তাদের মধ্যে বাছাইকিত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলো হচ্ছে:
- CJ Affiliate
- Amazon Associates
- Ebay Partner Network
- Cclickbank
এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম সাইট সমূহের নাম
এ পর্যায়ে আমরা আপনাদেরকে এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম সাইটের কিছু নাম সাজেস্ট করব। কেননা আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চান তাহলে আপনাকে প্রোগ্রাম সাইট সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম সাইডগুলো আসলে কোনগুলো।
E-commerce Affiliate program Site
- eBay
- Etsy
- Amazon Associates
- Daraz
- Alibaba
- Evaly
Financial affiliate program Site
- FreshBooks
- TurboTax
- Quickbooks
- TransUnion
- NetQuote
- Liberty Mutual
- Equifax
- Commission Soup
- Credit.com
- Bankaffiliates.com
Best Web hosting affiliate program Site
- GoDaddy
- WP Engine
- FlyWheel
- Liquid Web
- Cloudways
- NameCheap
- GreenGeeks
- Hostinger
- HostGator
- Dreamhost
Marketing & blogging affiliate program Site
- Bonsai
- Affluent
- Interact
- SEMRush
- Elementor
- OptimizePress
- Adobe
- LeadPages
- Instapage
- BigCommerce
- Shopify
- AWeber
- HubSpot
- Buzzsprout
- Thinkific
- Podia
- Teachable
- ConvertKit
Online job Affiliate Program Site
- CreativeLive
- Survey Junkie
- Contena
- SolidGigs
- FlexJobs
Niche-related affiliate program Site
- 100percentpure
- Dick’s Sporting Goods
- Nordstrom
- Travelpayouts
- TripAdvisor
- DIY.org
- Logitech
Beauty and Glamour affiliate program Site
- Ulta beauty
- Sephora
- L’Occitane en Provence
- BH Cosmetics
- BeautyTap
- Avon
- Madison Reed
Music affiliate program Site
- zZounds
- Singorama
- Sam Ash
- Musician’s Friend
- Guitar Center
Fitness affiliate program Site
- TRX Training
- ProForm
- Life Fitness
- Bowflex
- Ace Fitness
- Bodybuilding.com
Gaming Affiliate program Site
- Twitch
- Gamefly
- G2Deal
- Fanatical
- Astro Gaming
Fashion affiliate program Site
- Warby Parker
- True religion
- Stitch Fix
- Newchic
- MVMT Watches
- ModCloth
- Lane Byrant
- JNCO Jeans
- H&M
- Eddie Bauer
Virtual Private Network (VPN) Affiliate program Site
- IP Vanish
- PureVPN
- StrongVPN
- NordVPN
- ExpressVPN
- Surf Shark
Recurring Affiliate program Site
- ClickFunnels
- SpyFu
- NinjaOutreach
- Elegant themes
- PromoRepublic
- Teachable
- amoCRM
- Moosend
- Pabbly
- Stencil
Website affiliate program Site
- Site123
- 3dcart
- Sellfy
- ReferralCandy
- Weebly
- ClickMeter
- Wix
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি হালাল?
অনেকের প্রশ্ন এফিলিয়েট মার্কেটিং হালাল নাকি হারাম? তাদের প্রশ্নের উত্তরে বলব এটি পুরোপুরি হালাল মাধ্যম। যদি আপনি হালাল ভাবে চালাতে পারেন। কেননা আমরা এটা প্রত্যেকেই জানি যে প্রত্যেকটি বিষয়ের খারাপ ভালো দুইটি দিক থাকে। সুতরাং আমরা যেটা গ্রহণ করব আমাদের জন্য সেটাই প্রযোজ্য হবে।
আমরা যদি অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে হালাল পণ্য নিয়ে কাজ করি তাহলে সেটা হালাল ইনকাম হবে আর যদি হারাম পণ্য নিয়ে কাজ করি তাহলে সেটা আমাদের জন্য হারাম হয়ে যাবে। আর এটা প্রচারণের দায়িত্ব পড়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার দের ওপর। সুতরাং আপনি যদি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হয়ে সৎ পথে ইনকাম করার উদ্দেশ্যে হালাল প্রোডাক্ট গুলোর প্রচার করেন এবং সেগুলো বিক্রি করে টাকা ইনকাম করেন তাহলে অবশ্যই আপনার ইনকাম হালাল হবে।
আর হ্যাঁ এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করব? এর উত্তর মূলত একটাই। আর সেটা হল অধিক বেশি টাকা ইনকাম করার জন্য আপনি এফিলিয়েট মার্কেটিং কে বেছে নিবেন। কেননা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এমন একটি ইনকাম মাধ্যম যেখানে আপনি সফল হতে পারলে আপনার সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়ে ওঠা সম্ভব।
পরিশেষে: তো সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করব? এ সম্পর্কিত আমাদের আজকের আলোচনা পর্ব এখানেই শেষ করছি। তবে শেষ করার পূর্বে একটি কথা না বললেই নয়। আপনি যে মাধ্যমকেই টাকা ইনকামের জন্য বেছে নেন না কেন অবশ্যই আপনাকে ধৈর্যশীল এবং পরিশ্রমী হতে হবে। অনেকের ধারণা অনলাইন সেক্টর ইনকামের জন্য খুবই সহজ একটি মাধ্যম। তবে সত্যি কথা হচ্ছে এই সেক্টরে শুধুমাত্র তারাই টিকে থাকতে পারবে যারা অধিক বেশি বুদ্ধিমান এবং ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের। পাশাপাশি ধৈর্যশীল এবং দায়িত্বশীল।
আজ এ পর্যন্তই, যদি আপনি আত্মবিশ্বাসী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য এফিলিয়েট মার্কেটিং সেরা মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। তো সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং কোন মন্তব্য থেকে থাকলে আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ।