You are here
Home > ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার > তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি | তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি | তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি, এ-সম্পর্কে আমরা সবাই কমবেশি অবগত। তবে কখনো কখনো ভাইভা পরীক্ষা অথবা লিখিত পরীক্ষার সম্মুখীন হলে– তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ কি কি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণ সমূহ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির তাৎপর্যতা বর্ণনা করার প্রয়োজন পরে। তাই আজকের নিবন্ধনে আমরা জানাবো, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি এ সম্পর্কে A টু Z.

তো আপনি যদি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা, অসুবিধা, কার্যকারিতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে অবগত হতে চান তাহলে আজকে উল্লেখিত সকল ইনফরমেশন গুলো আয়ত্ত করার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কিভাবে ছাত্রদের জন্য ইনকাম এর ব্যবস্থা করে দেয় সে সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন সাজেস্টকৃত লিংকে। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হচ্ছে– প্রযুক্তিবিদ্যার একটি অন্যতম শাখা। মূলত তথ্য আহরণ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ এবং শেয়ারের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থাপনাকে তথ্যপ্রযুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তথ্য প্রযুক্তিকে ইনফরমেশন টেকনোলজিও বলা যায়। আবার তথ্যপ্রযুক্তিকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিও বলা হয়। 

বর্তমানে আমরা অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর। আর তাই বলা হয়ে থাকে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতি ঘটেছে। যদি একটু লক্ষ্য করেন তাহলে এটাও বুঝে ওঠা সম্ভব যে, তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এই দুইটির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পর্ক বিদ্যমান। 

আর বর্তমানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি অর্থাৎ আইটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মানুষ সেটাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে বেশি সম্মোধন করছে, যার পূর্ণাঙ্গ রূপ আইসিটি। বর্তমান সময়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় একটি বিষয় ICT (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি)। 

মূলত টেলিযোগাযোগ সম্প্রচার মিডিয়া, বুদ্ধিমান বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, অডিও ভিজুয়াল প্রসেসিং, ট্রান্সমিশন সিস্টেম, নেটওয়ার্কভিত্তিক নিয়ন্ত্রণসহ নিরীক্ষণের কার্য পরিচালনায় সহযোগী মাধ্যম বা ডিভাইস হচ্ছে ICT. এক কথায়– বর্তমান যুগে আমরা যেকোনো তথ্য আদান-প্রদান করার জন্য যে প্রযুক্তি বা যে ডিভাইস ব্যবহার করি সেটাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে?

বর্তমানে যোগাযোগের জন্য আমরা যে মাধ্যম বেছে নেই, তাকেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়। এখানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সমার্থক শব্দ হচ্ছে আইসিটি। মূলত প্রকৃতপক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এক ধরনের একীভূত যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা।  

একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, তৎসম্পর্কিত এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার, মিডলওয়ার তথ্য সংরক্ষণ, অডিও ভিডিও সিস্টেম সহ নানা বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত এক ধরনের ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে একজন গ্রাহক খুব সহজে তার প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ, সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে পারেন। 

অতএব, যে সকল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যে প্রযুক্তির সহযোগিতায় মানুষ আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে, খুব সহজে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সঞ্চালন ও বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হচ্ছে মূলত তাকেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়ে থাকে। আর আজকাল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দ্বারা একক তার বা একক লিংক সিস্টেমের মাধ্যমে টেলিফোন, অডিও ভিজুয়াল ও কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে প্রযুক্তিকে প্রকাশ করা হয় খুব ভালোভাবে। 

তবে হ্যাঁ, ইতোমধ্যে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি সংজ্ঞা উল্লেখ করেছি। তবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন যে ইউনেস্কো ব্যাংক থেকে প্রকাশিত আইসিটি ইন এডুকেশন প্রোগ্রাম শীর্ষ বই য়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি বিশেষ বাক্য প্রকাশ করা হয়েছে। যার অর্থ বোঝার মাধ্যমে আপনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। 

“The term ‘information and communication technologies’ (ICT) refers to forms of technology that are used to transmit, process, store, create, display, share or exchange information by electronic means.”

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি

এখন আসুন পরবর্তী আলোচনার মাধ্যমে জানি– তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণ সমূহ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদ।। এর পাশাপাশি আপনি চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আরো একটি পোস্ট পড়তে পারেন। এর জন্য ক্লিক করুন ফ্রিল্যান্সিং গাইড সাজেস্টকৃত এই লিংকে। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্র বিস্তৃত। তবে সংক্ষেপে বোঝার সুবিধার্থে আমরা আলোচনার এ পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ পয়েন্ট আকারে তুলে ধরবো। মূলত যে সকল ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান সর্বাধিক রয়েছে সেগুলোই হচ্ছে আইসিটির ক্ষেত্র সমূহ। যেমন–

  • বিশ্ব অর্থনীতিতে অবদান
  • শিক্ষা ক্ষেত্রে ই লার্নিং
  • সঠিক তথ্য ও সংরক্ষণ ও সরবরাহ করন সিস্টেম
  • তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি
  • তথ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তির প্রসার
  • তথ্য আদান-প্রদান বা তথ্য ও যোগাযোগ সিস্টেম

তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের দিকে যদি আমরা নজর দেই তাহলে বলা যায়– মানব জীবনে আইসিটির ব্যবহার এখন সর্বত্র বিস্তৃত। সেটা হোক আমাদের ব্যক্তিজীবনে অথবা বাহ্যিক জীবনে। কেননা আজকাল

  • বিনোদনের জন্য ব্যবহার করা হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে
  • পড়াশোনার কাজেও ব্যবহার করা হয় স্মার্ট ডিজিটাল প্রযুক্তিকে
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রেও আইসিটির ব্যবহার রয়েছে কল্পনাতীত
  • আবার বিজ্ঞান ও গবেষণা, কৃষি, শিল্প ও সংস্কৃতি সহ ব্যাংক শাখাতেও রয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষ। 

সুতরাং, বর্তমানে এই ডিজিটাল সময়ে এসে ডিজিটাল প্রযুক্তি অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রায় সকল স্থানে জায়গা দখল করেছে। এখন আসুন জেনে নেই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণ সমূহ। যে উপকরণ গুলোর নাম হরহামেশাই চাকরির ভাইভা পরীক্ষা অথবা এডমিশন পরীক্ষায় আসতে পারে। মূলত সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই এটা জেনে রাখা জরুরি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণ গুলো ক্ষেত্র সমূহ এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কে অল্প বিস্তর খুঁটিনাটি। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণসমূহ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে–

  • হার্ডওয়্যার 
  • সফটওয়্যার
  • ডাটা
  • নেটওয়ার্ক/ইন্টারনেট
  • দক্ষ জনশক্তি
  • প্রক্রিয়া
  • কম্পিউটার
  • রেডিও
  • টেলিভিশন
  • Smart বা android ফোন সহ প্রভৃতি

কেননা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বর্তমানে প্রযুক্তি বিদ্যার এমন একটি শাখা যার মাধ্যমে বৈদ্যুতিক উপায়ে তথ্য সংযোগ, সংগ্রহ প্রচার করা হয়ে থাকে। আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বৃহৎ সংসারের মধ্যে যেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবস্থান করে সেগুলো হলো ভিডিও, ডিভিডি, টেলিফোন (সাধারণ ও মোবাইল দু-ধরনের) বেতার ব্যবস্থা, কম্পিউটার-এর নেটওয়ার্ক, হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার এবং এই প্রযুক্তি গুলোর সঙ্গে যুক্ত আরও কাজও পদ্ধতি যেমন– ভিডিও-কনফারেন্সিং, ই-মেল, এসএমএস, এমএমএস ও ব্লগ সহ প্রভৃতি। 

এখন আসুন জেনে নেই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণের পরিচিতি সম্পর্কে। অতএব হার্ডওয়ার, সফটওয়্যার, ডেটা ইত্যাদি এই উপকরণ গুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। 

হার্ডওয়্যার: কম্পিউটার তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের ডিভাইস বা যন্ত্র এবং যন্ত্রাংশ সমূহই হল হার্ডওয়ার। আর কম্পিউটারের হার্ডওয়ারকে আমরা সাধারণত দেখতে পারি এবং স্পর্শ করতে পারি। কম্পিউটার ডিভাইসের হার্ডওয়ার গুলোর নাম হচ্ছে–

  • কিবোর্ড
  • মাউস
  • মাদারবোর্ড
  • মাইক্রোপ্রসেসর
  • ডিস্ক ড্রাই
  • প্রিন্টার
  • মনিটর 

আর এই কম্পিউটারের হার্ডওয়ার সাধারণত কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। সেগুলো হলো

  • ১. ইনপুট হার্ডওয়্যার (Input Hardware)
  • ২. প্রসেসিং হার্ডওয়্যার (Processing Hardware)
  • ৩. স্টোরেজ হার্ডওয়্যার (Storage Hardware)
  • ৪. আউটপুট হার্ডওয়্যার (Output Hardware)ঢ
  • ৫. কমিউনিকেশন হার্ডওয়ার (Communication Hardware)

সফটওয়্যার: সফটওয়্যার হল এক ধরনের নির্দেশনাবলি। আবার বলা যায় সফটওয়্যার হল কম্পিউটার বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে চালিত সমস্ত প্রোগ্রাম অ্যাপ্লিকেশন ও কোড। যাকে দুইটি প্রধান প্রকারে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। একটি হচ্ছে সিস্টেম সফটওয়্যার অন্যটি হচ্ছে এপ্লিকেশন সফটওয়্যার। 

ডাটা: ডাটা অর্থাৎ ডেটা হচ্ছে তথ্যের উপাদান। তথ্যের অন্তর্ভুক্ত ক্ষুদ্রতম অংশসমূহ কে ডেটা বা উপাত্ত বলে আখ্যায়িত করা হয়। আর এই ডাটা সাধারণত তিন প্রকার। যথা–

  • নিউমেরিক ডাটা
  • বুলিয়ান ডাটা
  • নন নিউমেরিক ডাটা

আর এর বাহিরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যে সকল উপকরণ রয়েছে সেগুলোর সাথে আমরা সবাই পরিচিত। 

আরো পড়ুন: সিম হ্যাক হলে বোঝার উপায় এবং মোবাইল দিয়ে কি কি করা যায় এ সম্পর্কে খুঁটিনাটি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব  | তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা ব্যক্তিগত জীবনে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ব্যক্তি জীবন ছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে যোগাযোগ ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উন্নয়নেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দারুন অবদান রয়েছে। এক কথায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে হাজারো সুবিধা। 

এছাড়াও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আরো দিয়েছে নতুন চাকরির সম্ভাবনা ও বিশ্বায়নের সুযোগ। একটু লক্ষ্য করলেই আমরা দেখতে পাবো তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি এটি ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী এক উন্নত পরিবর্তন ঘটেছে। একটা সময় ছিল যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে অধিবাসন করতে হতো শুধুমাত্র ব্যবসায়িক মিট আপ করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধায় ঘরে বসে অথবা অফিসে বসে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে যে কোন মিটিং বা যে কোন আলাপন সেরে ফেলার সম্ভাব হয়। 

এক কথায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক জীবন এবং চাকরির জীবনসহ অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে দিয়েছে অসাধারণ সুবিধা। তবে এর পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির রয়েছে কিছু অসুবিধা। তাই সুবিধা বা উপকারিতার দিক জানার পাশাপাশি অবশ্যই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধা বা ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে রাখা জরুরী। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধা | ডিজিটাল প্রযুক্তির অসুবিধা সমূহ

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবাদে যেমন আমাদের নানাবিদ উপকার মিলেছে ঠিক একইভাবে এই প্রযুক্তিতে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার ফলে অতিরিক্ত সময় ব্যয় এর সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির অসুবিধা সমূহ জানা প্রয়োজন একজন সাধারণ ব্যবহারকারক হিসেবে। 

মূলত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে সুবিধা নেওয়ার পাশাপাশি এটি অতিরিক্ত ব্যবহারে আসক্তির জন্য যাওয়ার কারণে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনে যেমন ব্যাঘাত ঘটছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, আবার অতিরিক্ত সময় বিভিন্ন ডিভাইসে চোখ রাখার ফলে সমস্যা দেখা দিচ্ছে চোখের। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধার দিকগুলো যদি বিবেচনায় রাখা হয় তাহলে এর অসুবিধা গুলো খুব একটা প্রভাব বিস্তার করে না। 

কেননা আমরা চাইলেই ডিজিটাল প্রযুক্তির অসুবিধা গুলো এড়িয়ে চলতে পারি এ প্রযুক্তির ব্যবহারে কিছু সীমাবদ্ধতা রাখার মধ্য দিয়ে। তো পাঠক বন্ধুরা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি এর সম্পর্কে আমরা সুস্পষ্ট ধারণা প্রদান করেছি ইতোমধ্যে। এখন আসুন আলোচনার শেষ মুহূর্তে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নিয়ে বহু জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর সমূহ জেনে নেই। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর

. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কত প্রকার ও কি কি?

✓ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নির্দিষ্ট প্রকারভেদ নেই। কেননা এটিকে আলাদা আলাদা শ্রেণীতে আলাদা আলাদা ভাগে বিভক্ত করা যায়। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে প্রধান চার ধরনের যোগাযোগ প্রযুক্তি রয়েছে। সেগুলো হলো–

  • টেলিফোন
  • রেডিও
  • টেলিভিশন এবং
  • ইন্টারনেট

২. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কিভাবে উন্নত হয়েছে?

সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তনশীল। আর তাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা ভাবনার পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে উন্নতির শীর্ষে পৌঁছেছে। 

. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কেমন?

দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এর দিকে নজর দিলে এটা এমনি বোঝা যায় যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব আমাদের জীবনে অপরিসীম। 

৪. যোগাযোগ ব্যবস্থা কত প্রকার ও কি কি?

যোগাযোগ ব্যবস্থা সাধারণত তিন প্রকার। যথা –

  • বাচনিক বা ভাষাগত যোগাযোগ ব্যবস্থা
  • অবাচনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা
  • লিখিত যোগাযোগ ব্যবস্থা

৫. আইসিটি এর অর্থ কি?

আইসিটি এর অর্থ হচ্ছে ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি অর্থাৎ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। সাধারণত কম্পিউটার ইন্টারনেট অনলাইন স্মার্ট ফোন ল্যাপটপ ইত্যাদি প্রযুক্তির উদ্ভবনের ফলে তথ্য ও যোগাযোগে নতুন যে মাত্রা যুক্ত হয়েছে সেটাকেই সংক্ষেপে আখ্যায়িত করা হয়েছে আইসিটি নামটির মধ্য দিয়ে। 

৬. তথ্যপ্রযুক্তি কি কি?

ইতিমধ্যে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্র সমূহ উল্লেখ করেছি। তবুও বোঝার সুবিধার্থে তথ্যপ্রযুক্তি কি কি তা উল্লেখ করা হচ্ছে। মূলত কম্পিউটার এবং টেলিযোগাযোগ মাধ্যমে সকল প্রকার তথ্য সংগ্রহ একত্রীকরণ সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থা এবং বিতরণের জন্য ব্যবহৃত সকল প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি। 

৭. তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি কোনটি?

কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি হিসেবে বর্তমানে হার্ডডিস্ক ব্যবহৃত হয়। অতএব বলা যায় হার্ডডিক্স হচ্ছে তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি। 

৮. যোগাযোগ ব্যবস্থার মৌলিক ব্লক কি কি?

যোগাযোগ ব্যবস্থা তে মৌলিক ব্লকগুলো হলো, তথ্য, উৎস, ইনপুট,  ট্রান্সডিউসার, ট্রান্সমিটার,  cam scaner দিয়ে স্ক্যান করা তথ্য উৎস যোগাযোগ রিসিভার এবং গন্তব্য। 

৯. পন্ডিতের মতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?

পণ্ডিতদের মতে আইসিটি হলো কম্পিউটার এবং টেলিকমিউনিকেশন এর মাইক্রো ইলেকট্রনিক্স ভিত্তিক সংমিশ্রণ দ্বারা ভোকাল, সচিত্র, পাঠ্য এবং সংখ্যা সূচক তথ্যের অধিগ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চয় এবং প্রচার। 

১০. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার

✓ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের বেশিরভাগ উদাহরণ আমাদের প্রতিদিনের জীবনে দেখা যায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন ব্যবহারগুলির মধ্যে সেরা ১০টি হলো- 

১. ইন্টারনেট ব্রাউজিং: ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে পেতে ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ, ফোরাম, সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম সংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্ত করতে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা।

২. ইমেইল: ইমেইল ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ, প্রেরকের অনুরোধে কাজ করা, বা তথ্য প্রেরণ এবং অনুরোধ প্রাপ্তকরণ

৩. সামাজিক মিডিয়া: ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন, ইত্যাদি সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আমাদের মতামত বিনিময় করা, নতুন মানুষ এর সাথে পরিচয়।

৪. মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা, যেমন ব্যাংকিং, শপিং, ট্রাভেলিং, গেমিং, ইত্যাদি।

৫. কার্যপরিচালনা সফ্টওয়্যার ব্যাবহার: প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, কার্যপরিচালনা, টাস্ক অ্যাসাইনমেন্ট, ডেডলাইন সেট করা, এই ধরনের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম সম্পাদন করার মধ্য দিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার। 

৬. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ডাটাবেস ডেভেলপমেন্ট, এই ধরনের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওয়েব সার্ভিস প্রদান। 

৭. ডিজিটাল মার্কেটিং: সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ইমেল মার্কেটিং, ইত্যাদি ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে পণ্য বা পরিষেবা বিপণন। 

৮. মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন: আমরা বিভিন্ন প্রকারের মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে কাজ সম্পাদন, শিক্ষা প্রাপ্তকরণ, গেম খেলাসহ প্রভৃতি কাজ সম্পাদন। 

৯. গুগল সার্চ: গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য অনুসন্ধান করা।

১০.কম্পিউটার সফটওয়্যার: বিভিন্ন কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাজ করা, নতুন কাজ সেখা ও শেখানো, ডাটা প্রস্তুত করা, ইত্যাদি। 

তো পাঠাবো বন্ধুরা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি এ সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানছি আজ এখানেই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং প্রযুক্তি ও অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত আর্টিকেল পড়তে আমাদের ফ্রিল্যান্স থেরাপি ওয়েবসাইট ফলো করতে ভুলবেন না। সবাইকে আল্লাহ হাফেজ। 

Facebook Comments

Leave a Reply

Top