বিজনেসে সফল হতে চান? জেনে নিন বিজনেস প্লান লেখার নিয়ম জরুরী টিপস বিজনেস আইডিয়া 0 একটি লিখিত ডকুমেন্টে আপনার ব্যবসার কারণ, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা মানেই একটি বিজনেস প্ল্যান রেডি করে রাখা। যা আপনাকে পথ বাতলে দিতে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সুন্দরভাবে বিজনেস প্ল্যান সাজানোর উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। কেননা অপরিকল্পিত কোনো স্বপ্নই কখনো সফল হয় না৷ হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। সুতরাং চলুন জেনে নিই বিজনেস প্লান লেখার নিয়মগুলি কি কি হতে পারে এবং এই বিজনেস প্লান লেখার সময় কি কি মাথায় রাখতে হবে সে-সম্পর্কে। বিজনেস কি? কোনো প্রতিষ্ঠান বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে দ্রব্য এবং সেবা নিয়ে কমার্শিয়াল কাজ বা লেনদেন করে তখনই সেই কাজটি বিজনেস হিসেবে পরিগণিত হয়। যারা বিজনেস এবং ব্যবসাকে এক মনে করেন তাদের বলে রাখা ভালো কোনো দ্রব্য বা সেবার উৎপাদন, ক্রয় এবং বিক্রয় সংক্রান্ত কাজ যখন করা হয় ঠিক তখনই কেবল তা ব্যবসা হিসেবে পরিগণিত হয়। সেখানে কমার্শিয়াল লেনদেনের ব্যাপারটি মূলত থাকে না। বরং প্রোডাক্ট উৎপাদন বা সেই প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করার ব্যাপারটি থাকে। বিজনেস প্লান কি? একটি বিজনেস শুরু করতে গিয়ে আপনি কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন, কোন পথে এগুলে চান এবং সফল হবেন, আপনার রিসোর্স পকেটে কি কি আছে, বিজনেস সংক্রান্ত্র সমস্যা ও সুবিধাগুলো কি কি এবং বিজনেস রিলেটেড গুরুত্বপূর্ণ আরো অন্যান্য বিষয়গুলিকে পয়েন্ট আপ করে নেওয়া মানেই বিজনসে প্ল্যান। একটি বিজনেস প্ল্যানে সাধারণত ব্যবসায়িক কলাকৌশল, পদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন সম্পর্কিত পয়েন্টগুলি এমনভাবে লেখা থাকে যাতে কোনো বিজনেস শুরু করতে চাওয়া উদ্যোক্তা তা ফলো করে সামনে এগুতে সক্ষম হয়। প্রতিটি সফল বিজনেস প্রজেক্টের পেছনে বিজনেসকে তার মতো করে এগিয়ে নিতে একটি সঠিক ফর্মুলা বা প্ল্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যাতে থাকবে বিজনেস টাইপ নির্ধারণ এবং প্রাথমিক কর্মকাণ্ডসমূহ থেকে শুরু করে সেলস আসার পরবর্তী প্ল্যানগুলির সঠিক সারণি! বিজনেস প্ল্যান তৈরির ধাপগুলো কি কি? সিদ্ধান্ত নির্ধারণ একজন বলিষ্ঠ উদ্যোক্তার সঠিক ডিসিশন নির্ধারণই হলো বিজনেস প্ল্যান তৈরি সর্বপ্রথম ধাপ। আপনি যেটি নিয়ে বিজনেস করতে চান সেই পণ্য বা সেবাটি কি এবং বিজনেস অফিসটি কোথায় অবস্থিত হবে বা কার্যক্রম কোথা থেকে পরিচালিত হবে তা আগে নির্ধারণ করে নিতে হবে। প্রাথমিক কর্মকাণ্ড একটি বিজনেস শুরু করার ক্ষেত্রে সেই বিজনেসের সম্ভাব্যতা যাচাই এর জন্য স্টাডি করে নেওয়া হলো কোনো একটি বিজনেস শুরু করার প্রাথমিক কর্মকাণ্ড। সাধারণত প্রজেক্টরর ধরণ, স্থান, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই প্রাথমিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। রিসার্চ করুন আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের উপর ভিত্তি করে আপনি যত অর্থবহ রিসার্চ করতে পারবেন ততই আপনার বিজনেস প্ল্যানটি একটি সফলতার কার্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। কেনোনা আপনার কোম্পানি বা স্টার্টআপ দাঁড়াবে সেই প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের উপর। এক্ষেত্রে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে অনলাইনে এবং অফলাইনে ভালোভাবে রিসার্চ করে নিন। বিজনেস প্রোফাইল প্রোফাইল বলতে এখানে কোনো ফেইসবুক প্রোফাইলের কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে বিজনেস প্রোফাইলের কথা। এক্ষেত্রে একটি বিজনেস প্রোফাইলের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি হলো বিজনেস শুরুর পেছনকার গল্প, প্রোডাক্ট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা, আপনার অডিয়েন্স কারা, কোন কোন রিসোর্সকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা আগাবেন, ভোক্তার কোন সমস্যাটি সমাধানে আপনার পণ্যটি সহায়ক এবং আপনি তা আসলে কিভাবে করবেন সে-সম্পর্কে বিভিন্ন সমাধান। কাজে নেমে পড়া সবশেষে আপনাকে সেই বিজনেম প্ল্যান অনুযায়ী আগানোর প্রিপারেশন নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ছোট্ট একটি পরিকল্পনাও করে ফেলতে পারেন! সেখানে থাকবে বিজনেস শুরু করার একদম প্রাথমিক বা ছোট ছোট বিষয়গুলি। বিজনেস প্লান লেখার সময় কি কি মাথায় রাখতে হবে? কোনো একটি বিজনেস শুরু করার পূর্বে প্রয়োজন একটি লিখিত বিজনেস প্ল্যান। এক্ষেত্রে আপনাকে জানতে হবে বিজনেস প্লান লেখার সময় কি কি এবং লেখার সময় সে-সব পয়েন্টও মাথায় রাখতর হবে। চলুন জেনে নিই বিজনেস প্লান লেখার সময় কি কি মাথায় রাখতে হবে সে-সম্পর্কে। ছোট লেখা বিজনেস প্ল্যানের উদ্দেশ্য বড় থাকলে চেষ্টা করতে হবে প্ল্যানটিকে ছোট করে লিখতে। তবে মাথায় রাখতে হবে সেই প্ল্যান ছোট করে লিখলেও বিজনেস প্ল্যানটিতে যেন প্রতিটি বিষয়ই থাকে। এক্ষেত্রে বিজনেস প্ল্যানের দৈর্ঘ্য যাতে অযথা লম্বা হয় সেদিকে মাথায় রাখলেই আশা করে কাজ হয়ে যাবে। গোছানো পয়েন্ট মনে রাখবেন খুব লম্বা বিজনেস প্ল্যান হলে সেটিতে ফোকাস করে কাজ করা খুবই কঠিন। এক্ষেত্রে ছোট বিজনেস প্ল্যানই বেটার। ফলে গোছানো বিজনেস প্ল্যান লেখা খুবই সহজ হয়। ৩০ পাতার মধ্যে রাখা প্ল্যানটি অবশ্যই গোছানো হতে হবে। অডিয়েন্স নিয়ে ভাবুন আপনার বিজনেস পরিকল্পনাটিকে পাঠকের কাছে যদি অর্থবহ না হয় তাহলে সেই বিজনেস প্ল্যানের কোনো গুরুত্বই নেই। সুতরাং লেখার আগে অডিয়েন্স সম্পর্কে ভাবতে হবে। তাদের সমস্যার সমাধান হচ্ছে কিনা খেয়াল করতে হবে। স্মার্ট বিজনেস প্ল্যানে জটিল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার না করাই ভালো। এক্ষেত্রে রিডারের বুঝতে সুবিধা হবে। একজন সৃজনশীল উদ্যোক্তা হয়ে কিভাবে ঘরে বসেই আয় করবেন বিজনেস প্লান লেখার নিয়ম কি? এবার জানবো বিজনেস প্লান লেখার নিয়ম কি সে-সম্পর্কে। চলুন একটি স্মার্ট বিজনেস প্লান লেখার নিয়মগুলি জেনে নিই। সবার আগে সম্পূর্ন ব্যবসায় পরিকল্পনার সারমর্মটি সংক্ষেপে তুলে ধরতে হবে। বিজনেসটির লক্ষ্য কি হতে যাচ্ছে তা সম্পর্কে এক কথায় অডিয়েন্সদের জানিয়ে দিতে হবে। এবার বিজনেস প্ল্যানটিতে আপনার নব্য প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের সাধারণ তথ্যসমূহ লিখে ফেলুন। প্ল্যান লেখার এই পর্যায়ে আপনাকে বাজারের সামগ্রিক অবস্থা, প্রতিযোগীদের অবস্থান, গ্রাহকদের মনোভাব সম্পর্কে জানতে বাজার গবেষণায় নামতে হবে। একটি সেরা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবস্থাপনা বেছে নিয়ে সেই অনুযায়ী একটি সংগঠন সম্পর্কিত তথ্য শিট তৈরি করে নিন। এই পর্যায়ে প্রতিষ্ঠান কি পণ্য নিয়ে কাজ করবে সে সম্পর্কে কিছুটা গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করুন। এবার আপনাকে প্ল্যানে কোন খাতে কত ব্যয় হবে তা যুক্ত করতে হবে। সবশেষে সম্ভাব্য সফলতা এক কথায় লিখে ফেলুন। হয়ে গেলো আপনার একটি স্মার্ট বিজনেস প্ল্যান লিখে ফেলার কাজটি। ই-কমার্স বিজনেস প্ল্যান লেখার নিয়ম কি? সাধারণ বিজনেস প্ল্যান এবং একটি ই-কমার্স বিজনেস প্ল্যান লেখার নিয়ম কিন্তু সম্পূর্ণই আলাদা। চলুন জেনে নিই ই-কমার্স বিজনেস প্ল্যান লেখার নিয়ম কি কি হতে পারে। সামারি ই-কমার্স বিজনেস প্ল্যানের ক্ষেত্রেও আপনাকে খুব সংক্ষিপ্ত আকারে একটি সামারি লিখে ফেলতে হবে। প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এবার আপনাকে অতি সতর্কতার সাথে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস নিয়ে রিসার্চ করে তা উল্লেখ করতে হবে। যেহেতু ডিজিটাল ওয়েতে বিজনেস হবে সেহেতু এ-ব্যাপারটা খুব সেনসিটিভলি নিতে হবে। খরচ দোকানের ভাড়া, সিকিউরিটি মানি, বিদ্যুৎ বিলসহ নানা খরচের প্রেশার না থাকায় কেবল ডিজিটাল এক্সেসরিস নেওয়ার উদ্দেশ্যে খরচের দিকটা প্ল্যানে রাখতে হবে। উদ্দেশ্য সবশেষে আপনি কোন টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন সেটি ক্লিয়ারলি লিখবেন এবং সাথে একটি অনুপ্রেরণামূলক বিজনেস কোট রাখবেন। বিজনেস প্লান কেনো লিখতে হবে? সোজা কথায় আপনার পেশাকে ঘিরে একটি প্লান সাজাতেই হবে। নতুবা আপনার অফলাইন বিজনেস হুট করেই কোনো খারাপ নোটিশ কিংবা অফলাইনে বিজনেসে সাইট ডিজেবল হওয়ার মতো বিপদগুলির মোকাবেলা করার সক্ষমতা থাকবে না। সুতরাং ঝুঁকি থেকে বাঁচতে একের পর এক প্লান যদি আপনার সাজানো থাকে তাহলে আপনাকে আর ঝামেলায় পড়তে হবে না। মূলত এ-কারণেই আপনাকে একটি বিজনেস প্লান লিখতেই হবে। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বিজনেস প্ল্যান তৈরি না করে চোখ, কান, মুখ সমান ভাবে ব্যবহার করে কাজ করতে হবে। কেনোনা এটি একটি সফলতার চাবি। যদি আপনি অনাগত আগামীর দিনগুলোতে নিজ বিজনেসের কার্যক্রম কিভাবে চলবে সেসবের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চান তবে আমি বলবো একটি বিজনেস প্ল্যানই আজই লিখে ফেলুন বা প্রফেশনাল কোনো প্ল্যানিং রাইটার দ্বারা তৈরি করিয়ে নিন। Facebook Comments Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share Share on LinkedIn Share Share on Digg Share