![ফ্রিল্যান্সিং এর বাধা](https://freelancingtherapy.com/wp-content/uploads/2021/01/বাংলাদেশিদের-জন্য-ফ্রিল্যান্সিং-শুরু-করার-বড়-বাধাগুলো-কি.jpg)
প্রতিবছর বাংলাদেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে লক্ষ লক্ষ গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে। কিন্তু এই এত গ্রাজুয়েটের বিপরীতে চাকরির পরিমাণ খুবই নগণ্য। যার ফলস্বরূপ বেকারত্বের অভিশাপকে বরণ করতে হয় বিরাট সংখ্যক গ্রাজুয়েটদের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রিল্যান্সিং এর বদৌলতে বেকারত্বের খোলস থেকে মুক্ত হয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে উদ্যোমি তরুণরা।নিজেদের দক্ষতা এবং সৃজনশীলতাকে পুঁজি করে স্বেচ্ছায় সাফল্যের সাথে এই খাতে কাজ করে যাচ্ছে লক্ষাধিক তরুন।
সফলতার এই অপার হাতছানি তাই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় ব্যপকহারে আকৃষ্ট করছে তরুণদের। ঘরে বসে ইনকাম এবং বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ফ্রিল্যান্সের প্রতি এক অধীর আগ্রহ প্রতিনিয়ত জমা হচ্ছে তরুণদের মাঝে। তবে ফ্রিল্যান্সিং সম্ভাবনার হাতছানি দিলেও সঠিক দিকনির্দেশনা এবং মুদ্রার অপরপিঠের প্রতিকূলতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকার ফলে বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় নতুন ফ্রিল্যান্সারদের।
তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে জেনে নিন আপনাকে যেসব চ্যালেঞ্জ এর সম্মুখীন হতে হবেঃ
ট্রেইনিং বিড়ম্বনা
প্রথমেই একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের মনে যে প্রশ্নগুলো খচখচ করে তা হলো –
- কিভাবে শুরু করব?
- কোথায় কাজ পাওয়া যাবে?
- কোন বিষয়ে কাজ শুরু করব?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুজতে গিয়ইে অনেকে শিকার হন প্রতারণার।বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী এবং প্রতিষ্ঠান ট্রেইনিং এর নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে রাখছেন।আর অজ্ঞতা এবং অসাবধানতা বসত সেই ফাঁদে পাঁ দিচ্ছে তরুণরা। এসব প্রতারকচক্র চোখের সামনে স্বপ্নের ফুলঝুড়ি সাজিয়ে দিয়ে কোর্সের নামে আপনাকে গছিয়ে দিতে পারে নিজেদের তৈরী সস্তা ভিডিও।যেখান থেকে আপনি উপকৃত হওয়ার বদলে কূল হারিয়ে ফেলতে পারেন।শুরুতেই ধোকার সম্মুখীন হয়ে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে এক ধোয়াশা মনে কাজ করতে পারে।
তাই খেয়াল রাখবেন এবং সতর্ক থাকবেন যে,আপনি কার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। এবং আপনাকে কি সঠিক পরামর্শ দিচ্ছে নাকি নিজের গুগল,ইউটিউব থেকে কপি করা কোর্স বুঝিয়ে দিচ্ছে।
পেপাল (PayPal) ব্যবহার করতে না পারা
পেপাল ব্যবহার না করা হতে পারে একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনার জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। কারণ অনেক বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেসেরই পেয়িং মেথড হচ্ছে পেপাল। আবার বেশিরভাগ ক্লায়েন্টই পেপাল এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সারদের টাকা পরিশোধ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।কারণ অর্থলেনদেনে বিশ্বে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহ্রত পদ্ধতি পেপাল (PayPal)। কিন্তু বাংলাদেশে এই পেপালের ব্যবহার নেই।যার ফলে একদিকে যেমন অনেক ভাল ভাল প্রজেক্ট হাতাছাড়া হয়ে যায় অন্যদিকে অর্থ উত্তোলনে নানা জটিলতায় ভুগতে হয় ফ্রিল্যান্সারদের। আবার অর্থ উত্তোলনের পদ্ধতি থাকলে ও কোনো কোনোটি ব্যয়বহুল এবং নানাবিধ ঝামেলাযুক্ত।এক্ষেত্রে একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারকে এসব দিক বিবেচনায় রাখতে হবে।এবং বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ব্যাংক টু ব্যাংক ওয়্যার ট্রান্সফার,পেওনিয়ার একাউন্ট ইত্যাদি বিষয়ের ব্যবহার জানতে হবে।
সময় ব্যবধান
মূলত ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটের বেশিরভাগ ক্লায়েন্টই পশ্চিমা দেশগুলোর।তাই একজন ফ্রিল্যান্সার সিংহভাগ কাজের যোগান পেয়ে থাকে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে। আর পশ্চিমা ঐ সকল দেশগুলোর সাথে আমাদের সময়ের ব্যবধান বিস্তর। অর্থাৎ তাঁদের সাথে আমাদের সময়ের পার্থক্য চার থেকে শুরু করে বারো ঘন্টা পর্যন্ত ও হতে পারে। তাই প্রজেক্ট বিডিং করতে হলে আপনার বেশিরভাগ সময় রাতের বেলায় বিড করতে হবে। তাই আপনার রাতের আরামের ঘুম টিকে জলাঞ্জলি দিতে হতে পারে।
বিডিং চ্যালেঞ্জ
বিডিং এর ক্ষেত্রেও একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারকে কিছুটা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। অনেকসময় নতুন ফ্রিল্যান্সাররা ভেবে থাকেন যে,বিডিং করলে ক্লায়েন্ট কি ভাববে,অথবা কাজটা হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনে থাকে কি না এই নিয়ে দ্বিধা-দন্ডে পড়েন। ফলে অনেক সময় কাজে প্রয়োগকৃত শ্রম অনুযায়ী ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে কিছুটা বঞ্চিত হতে হয় একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারকে। তবে ক্লায়েন্টের মতিগতি পর্যবেক্ষণ করে নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে এ সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
পে-মেন্ট সম্পর্কে আলোচনা
শুরুর দিকে কোন একটি কাজ জেন্যুইন কিনা বুঝে উঠতে না পারাটাও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।আবার কাজটি জেন্যুইন হলেও ক্লায়েন্টের সাথে পে-মেন্ট বিষয়ক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।এ ক্ষেত্রে নতুন ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে একটা সংকোচ কাজ করে পে-মেন্ট বিষয়ক ব্যাপারগুলো খোলামেলা আলোচনা করার ব্যাপারে। এই সমস্যাটির সমাধান করতে হলে ক্লায়েন্ট পে-মেন্ট কিভাবে,কখন দিতে চান এ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে ক্লায়েন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
কভার লেটার
প্রায় বেশিরভাগ মার্কেটপ্লেসে বিডিং করার সময় কভার লেটার দিতে হয়।যেকোনো কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার এই কভার লেটার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে অনেকসময়ই নতুনদের মাঝে এ ব্যাপারে উদাসীনতা লক্ষ্যণিয়।তাই পছন্দের কাজটি পেতে হলে খেয়াল রাখতে হবে কভার লেটার টি যেন প্রাসঙ্গিক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।কভার লেটারের ভিতরে যথেষ্ট সম্ভব আপনার সৃজনশীলতার প্রকাশ থাকতে হবে। এবং একইসাথে কভার লেটারটি হতে হবে আকর্ষণীয়।
যোগাযোগ ও ভাষাগত দক্ষতা
ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা কম থাকার দরুণ অনেক সময় ফ্রিল্যান্সারদের কাছ থেকে নতুন কাজ হাতছাড়া হয়ে যায়। আবার কাজ পেলেও ভালো ক্লায়েন্ট ধরে রাখা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে যায়।ভালো ক্লায়েন্ট পাওয়া একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের জন্য সৌভাগ্যের বিষয় বটে।কারণ এতে পরবর্তীতে বড় এবং ভাল প্রজেক্ট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।কিন্তু সঠিক যোগাযোগ দক্ষতার অভাবে পছন্দের ক্লায়েন্ট হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। তাই সর্বোপরি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের উচিত তাঁর ইংরেজী ভাষাগত দক্ষতা এবং যোগাযোগ দক্ষতার যতদ্রুত সম্ভব উন্নতি করা।
নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টের উপর অতি নির্ভরশীলতা
একটা ব্যাপার একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের সার্বক্ষণিক মাথায় রাখা উচিত যে,কোনো ক্লায়েন্টই চিরস্থায়ী নয়। আজকে যার কাছ থেকে নিয়মিত কাজ পাচ্ছেন হতে পারে পরবর্তীতে যে কোন কারণবশত ঐ ক্লায়েন্ট আপনাকে দিয়ে আর কোনো কাজ নাও করাতে পারে। আপনি যদি ঐ ক্লায়েন্টের উপর যথেষ্ট নির্ভরশীল হয়ে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে আপনি তৎপরবর্তী কাজের সংকটের সম্মুখীন হতে পারেন। তাই একজন বা নির্দিষ্ট ক্লায়েন্টের উপর নির্ভর করলেই চলবেনা,এর পাশাপাশি অন্যান্য ক্লায়েন্টের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করুন। যাতে পরবর্তীতে কাজের সংকট না হয়।
কাজের সংকট সম্পর্কে অবগত হওয়া
একজন ফ্রিল্যান্সারের প্রায় সময়ই কাজের অস্বাভাবিক অপ্রতুলতা দেখা যায়। অর্থাৎ যথেষ্ট পরিমাণ কাজ না পাওয়া।ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার হচ্ছে সময়বিশেষ কাজের পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে। এক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং জগতে সদ্য পাঁ দেওয়া একজন ফ্রিল্যান্সারকে আর্থিক ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে। অর্থসংকটে পড়ার পূর্বেই নতুন নতুন কাজে সুইচ করার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। এবং সেই সাথে বেশি সময় যাবত যেসব প্রজেক্টে কাজ করতে পারবে,সেই প্রজেক্টগুলোতে কাজ করার ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
প্রযুক্তির পরিবর্তন
সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তির যেমন পরিবর্তন হচ্ছে ঠিক তেমনি কাজের ধরনেরও পরিবর্তন হচ্ছে।তাই একজন ফ্রিল্যান্সারকে সবসময় পরিবর্তন কে গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে। এবং মার্কেটের চাহিদার কথা মাথায় রেখে নিজের কাজের ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। আবার অনেক সময় একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করায় একঘেয়েমিতা ও অবসাদ চলে আসে।তাই সর্বোপরি পরিবর্তনে বিশ্বাসী হতে হবে।
হয়ত আপনি যে কাজটি করছেন সেখানে সাফল্য পাচ্ছেন নাহ কিংবা সেই একই কাজ করার দরুন একঘেয়েমিতা চলে আসছে অথবা আরো বেশি অর্থের কথা ভাবছেন সেক্ষেত্রে আপনি আপনার কাজের ধরন পরিবর্তন করতে পারেন।যেমন,এখন আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন করছেন। সেক্ষেত্রে আপনি পরবর্তীতে এনিমেশন কিংবা ওয়েব ডিজাইন বা ডেভেলপমেন্টের কাজ করা শুরু করতে পারেন। তবে কাজের ধরনের পরিবর্তনের পূর্বে ঐ কাজটিতে যথেষ্ট দক্ষতাও ভালোমতো ধারণা রাখতে হবে।
কাজে গড়িমসি
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার পর প্রথমদিকে ফ্রিল্যান্সাররা যেকোনো প্রজেক্ট পেলেই সঙ্গে সঙ্গে হ্যাঁ বলে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষণিয়। যা নিতান্তই ভুল কাজ।যখনই যে প্রজেক্টের প্রস্তাবই আসুক না কেন আপনাকে প্রথমে খেয়াল রাখতে হবে কাজটি আপনি সম্পূর্ণ সম্পন্ন করতে পারবেন কিনা। অথবা কাজটি যে দক্ষতা বা জ্ঞান প্রয়োজন তা আপনার আছে কিনা। এই বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ না করলে ভবিষ্যত কাজ হারানোর সম্ভাবনা তো রয়েছেই এবং সেই সাথে আপনার দেশের বাকি ফ্রিল্যান্সারের প্রতি ও একটা বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে ক্লায়েন্টদের।
সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবে না নেওয়া
সর্বোপরি নিজের ভিতর সমালোচনা গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে।আপনি খুব সুনিপুণ এবং আপনার সর্বোচ্চ টা দিয়ে কাজ করার পর ও আপনি ক্লায়েন্টের সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারেন। নতুন ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে এ ব্যাপারটির একটু বেশিই মুখোমুখি হতে হয়। এ ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণ ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে হবে।
কখনোই ক্লায়েন্টের সাথে খারাপ ব্যবহার করা যাবেনা। ক্লায়েন্টের সাথে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ উঠলে মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার একাউন্টটি বাতিলও করে দিতে পারে।কারণ ব্যবসায়ের ভাষা অনুযায়ী,”Customer is always right”. তাই ঠান্ডা মাথায় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
ধীরগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ
যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং এর সমস্ত কাজটাই ইন্টারনেটের মাধ্যেমে হয়ে থাকে,তাই দ্রুতগতিসম্পন্ন ইন্টেরনেট নিশ্চিত করা একজন ফ্রিল্যান্সারের জন্য অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন কিংবা ধীরগতিসম্পন্ন হওয়ার দরুণ পছন্দের কাজটি অনেকে সময় হাতছাড়া হয়ে যায়। প্রায় সময়ে কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এবং বলতে গেলে কাজ করা সম্ভবপরই হয়ে ওঠে নাহ নিরবছিন্ন ইন্টারনেট ছাড়া। তাই এ ব্যাপারগুলোর দিকে আপনাকে অবশ্যই দৃষ্টিপাত করতেই হবে।
কাজের দক্ষতা
নির্দিষ্ট ক্ষেত্র সম্পর্কে পর্যাপ্ত দক্ষতা না থাকায় নতুন ফ্রিল্যান্সাররা প্রায়ই হীনম্মণ্যতায় ভুগে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনার মাথায় রাখতে হবে সময়ের সাথে আপনার কর্মস্পৃহাই আপনাকে দক্ষ করে তুলবে। কোনো একটি বিষয়ে অভিজ্ঞ হতে হলে সেই বিষয় সম্পর্কে নিজের থাকতে হয় প্রবল স্পৃহা। তাই আপনার কাজের ক্ষেত্রটি তে নিত্যনতুন পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এবং নিজেকে সবসময় আপডেট রাখতে হবে। সেইসাথে কাজের দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাতে হবে।
উল্লেখিত চ্যালেঞ্জগুলো ব্যতীত ও একজন ফ্রিল্যান্সারের কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যাকে মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হয়।তাই একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারের এ সম্পর্কে আগাম ধারণা থাকা আবশ্যক।
তাহলে জেনে নেওয়া যাক,একজন ফ্রিল্যান্সার যেসব স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেনঃ
- প্রথমেই একজন ফ্রিল্যান্সারকে যে স্বাস্থ্যঝুকিগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়ে তা হলো – ঘুমজনিত নানান সমস্যা। একজন ফ্রিল্যান্সারকে বেশিরভাগ সময়েই রাত জেগে কাজ করতে হয়। এই অনিয়মঘটিত কাজ শরীরের উপর নানান ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে যেমন,ক্লান্তি,অবসাদ। এছাড়াও অনেকে ইনসমনিয়া বা অনিদ্রাজনিত রোগে ভুগে থাকে।
- একজন ফ্রিল্যান্সারকে দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার স্ক্রিণের সামনে বসে থেকে কাজ করতে হয়।তাই দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার স্ক্রিণে কাজ করার ফলে চোখের বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন, চোখ জ্বলা,চোখ শুকিয়ে যাওয়া,দৃষ্টি আচ্ছন্ন কিংবা ঘোলা দেখা,চোখ চুলকানো,ডাবল ভিশন অর্থাৎ এক বস্তুকে দুটি দেখা ইত্যাদি।
- দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে কাজ করার ফলে অর্থাৎ কম্পিউটার টেবিলের সামনে বসে কাজ করার দরুণ মাথাব্যাথা,ঘাড়েব্যাথা,পিঠব্যাথা ইত্যাদি সহ আরো বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত সমস্যা অনুভূত হতে পারে। আবার একনাগাড়ে কম্পিউটার অপারেটিং এর ফলে হাতব্যাথা,সন্ধি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
- সারাদিন একই স্থানে অর্থাৎ নিজ ঘরে কম্পিউটারেই কাজ সম্পন্ন করার ফলে খুব একটা ফিজিক্যাল একটিভিটি কিংবা ওয়ার্কআউট করা সম্ভবপর হয় না একজন ফ্রিল্যান্সারের। তাই উচ্চ রক্তচাপ,পেশির সংকোচন ক্ষমতা লোপ পাওয়া,শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়া,হাটুতে ব্যাথা ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে।আবার স্বাস্থ্য ভেঙে যাওয়ার প্রবণতাও লক্ষণিয়।
- দিনের বেশিরভাগ সময়েই একই স্থানে থাকার ধরুন একজন ফ্রিল্যান্সার একাকীত্ব,মানসিক অবসাদ সহ বিভিন্ন মানসিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। এছাড়াও প্রায়শই অত্যাধিক মানসিক চাপের মধ্যে থাকতে হয় একজন ফ্রিল্যান্সারকে।
- পেশা হিসেবে সামাজিক স্বীকৃতি না থাকায় প্রায়শই ফ্রিল্যান্সারদের হীনমন্যতায় ভোগতে দেখা যায়। এবং কাজের পরিমাণ ওঠা-নামার ফলে প্রয়োজন পড়ে প্রবল মানসিক শক্তি।
উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়া ও সময়ের পরিবর্তনের সাথে একজন ফ্রিল্যান্সারকে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। এবং একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে এই চ্যালেঞ্জ গুলো মোকাবিলা করার জন্য মানসিক প্রস্তুতির প্রয়োজন।
পরিশেষে এই প্রত্যাশাই রইলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সফলতার মুখ দেখবেন আপনিও। এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হয়ে নিজ পরিবারের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে লক্ষ উদ্যোমি তরুণ।