এই ডিজিটাল যুগে এসেও সকল ডিজিটাল নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমের মাঝে এখনো রয়েছে সেই বিজনেস কার্ড ডিজাইন এর চাহিদা। কেননা এই বিজনেস কার্ড হিউমেন ফ্যাক্টর ইউটিলাইজ করার সুবিধা রাখে বলে গ্রাহক বিজনেস কার্ডের উপরই অনেকটা নির্ভর করে সার্ভিস নিতে রাজি হয় বা সিদ্ধান্ত নেয়। সুতরাং আপনার সার্ভিস বা প্রোডাক্টকে অন্যদের কাছে মেমরেবল করে তুলতে সাহায্য করার ক্ষেত্রে এই বিজনেস কার্ডের গুরুত্বকে কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। আপনি চাইলে এই বিজনেস কার্ডকে পুঁজি করেই আয় করতে পারেন। সুতরাং বিজনেস কার্ড ডিজাইন করে ঘরে বসে আয় করতে চাইলে পুরো আর্টিকেলের সাথেই থাকুন আর জানুন কিভাবে সহজেই বিজনেস কার্ড ডিজাইন করে ঘরে বসে আয় করা যায়।
লোগো ডিজাইন কি? লোগো ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা সম্ভব?
বিজনেস কার্ড ডিজাইন কি?
প্রফেশনাল ব্যক্তি বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ও যোগাযোগের তথ্য উল্লেখ করে বিজনেস রিলেটেড কার্ড ডিজাইনিংয়ের যে করা হয় সেই কাজটিই হলো বিজনেস কার্ড ডিজাইন। এটি সাধারণত গ্রাফিক্স ডিজাইনিং কাজের অন্তর্ভুক্ত একটি ডিজাইনিংয়ের কাজ। যা সাধারণত করা হয় ক্রিটেভিটির উপর।
একটি বিজনেস কার্ড দ্বারা যেকোনো ব্যবসায়ী খুব সহজেই অডিয়েন্স ইনফ্লুয়েন্স করতে পারে। ফলে ছোট বড় সব বিজনেসের ক্ষেত্রেই আজকাল এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি ভিজিটিং বা বিজনেস কার্ড ডিজাইন করতে যথেষ্ট ক্রিয়েটিভিটির দরকার পড়ে। সেনসিটিভ এই ডিজাইনিং যেহেতু সবাই করতে পারে না সেহেতু বিজনেস কার্ড ডিজাইন করতে পারে এমন প্রফেশনাল ডিজাইনারের চাহিদা সবসময়ই থাকে। চাইলে আপনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই সেক্টর থেকে ইজিলি আর্ন করতে পারেন।
বিজনেস কার্ড কত প্রকার?
আমরা ঢালাওভাবে বিজনেস কার্ডকে চিনে থাকলেও বিজনেস কার্ডের কিন্তু বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। এই পর্যায়ে আমরা জানবো বিজনেস কার্ড কত প্রকারের হতে পারে সে-সম্পর্কে।
- Matt Lamination
- Spot Lamination
- Folding
- Glossy Lamination
Matt Lamination
Matt Lamination হলো এমন একটি বিজনেস কার্ড যেই কার্ডের উপরও পলির প্রলেপ থাকে। ম্যাট কার্ড, গ্লোসি লেমিনেশন কার্ড থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি টেকসই হওয়ায় এই টাইপের বিজনেস কার্ডের চাহিদা বেশি।
Spot Lamination
স্পেশাল ডিজাইন বা লেখাকে ক্রেতার পছন্দ অনুযায়ী স্পট করে যেসব বিজনেস কার্ড তৈরি করা হয় সে-সব বিজনেস কার্ডকে Spot Lamination বিজনেস কার্ড বলা হয়। এগুলির দাম তুলনামূলক বেশি।
Folding
মাঝখানে ভাঁজ/ফোল্ড করে ব্যবহার করা বিজনেস কার্ডগুলি সাধারণত Folding বিজনেস কার্ড হিসেবে পরিচিত। এই টাইপের বিজনেস কার্ডে বেশি তথ্য থাকে এবং তুলনামূলক বড় ধরণের হয়।
Glossy Lamination
Glossy Lamination হলো সে-সব বিজনেস কার্ড যেসব বিজনেস কার্ড বাঁকালে বা কাঁধ করলে তাতে গ্লোসি ভাবটা ফুঁটে উঠে। একধরনের পাতলা পলি পেপারের প্রলেপ কার্ডের উপরে থাকার কারণে এমন গ্লোসি ভাব ফুঁটে উঠে।
বিজনেস কার্ড সাইজ কত?
বিজনেস কার্ড তৈরি করতে গেলেও আপনাকে একটি স্ট্যান্ডার্ড সাইজ মেনে ডিজাইন করতে হবে। বিজনেস কার্ড সাইজ সাধারণত ৩.৫*২ ইঞ্চি হয়ে থাকে। সাথে ব্লেড যোগ করতে ৩.৭৫*২.২৫ ইঞ্চি রাখতে হবে। আবার ৩.৫”*২” ইঞ্চি এর সাথে.২৫”*.২৫” ইঞ্চি যোগ করে বিজনেস কার্ডের ব্লেডের সাইজটাকেও সিলেক্ট করে নিতে হয়।
বিজনেস কার্ডে কি কি তথ্য রাখতে হয়?
যেহেতু একটি ভালো ভিজিটিং কার্ড আপনার ব্র্যান্ডের এক্সটেনশন হিসেবে কাজ করে সেহেতু এতে থাকা বিভিন্ন তথ্যকেও ঠিকঠাকভাবে কাস্টমাইজড করে তা ডিজাইন করাটাও জরুরি। এক্ষেত্রে আমরা জেনে নিবো বিজনেস কার্ডে কি কি তথ্য রাখতে হয় সে-সম্পর্কে। চলুন স্টেপ বাই স্টেপ তা জেনে নিই।
কোম্পানির নাম
বিজনেস কার্ডে আপনাকে মানুষ যেই নামে চেনে, সেই নামের পাশাপাশি কোম্পানির নামটাকেও ঠিকঠাকভাবে ডিজাইন করে বসাতে হবে। অনেকেই এই নাম সিলেক্ট করতে গিয়েও ভুল করে। যদিও নামের ব্যাপারটিকে অনেকেই বেশ সাধারণ মনে করে। ফলে অতটা গুরুত্ব দেবার প্রয়োজন মনে করে না। প্রফেশনাল বিজনেস কার্ড তৈরি করার সময় ফর্মাল ইনফরমেশন লিখে না দিয়ে নিজের পরিচয় তুলে ধরার চেষ্টা করতে হবে।
জব টাইটেল
অনেকেই মনে করে বিজনেস কার্ডে নামের পাশে সিইও, ফাউন্ডার বা প্রেসিডেন্টের মতো জব টাইটেল রাখা মানেই কার্ডটিকে প্রফেশনাল কার্ড হিসেবে ধরে নেওয়া। যা একেবারেই ভুল ধারণা। একজন বিজনেস কার্ড ডিজাইনার হিসেবে আপনি যখন কারো বিজনেস কার্ড ডিজাইন করতে বসবেন তখন এই জব টাইটেলের ব্যাপারটির দিকে যথেষ্ট নজর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে কার্ড যার নামে হচ্ছে তিনি জেনুইনভাবে কি করেন তার একটি ছোট ডেসক্রিপশন তুলে ধরা যেতে পারে। তবে জব টাইটেল না। কেননা এটি স্টাইলিশ পার্ট হলে আজকাল কেউ এর গুরুত্ব দেয় না। সুতরাং যে পার্টটিতে গ্রাহক গুরুত্ব দিচ্ছে না সেটি অযথা বিজনেস কার্ডের মতো ছোট্ট কার্ড ভর্তি করে কোনো ফায়দা নেই। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
প্রোফাইল
বিজনেস কার্ডে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা অন্যান্য প্রোফাইল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি। তবে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে ৭/৮ টা সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল কার্ডে রাখার চেষ্টা করতে যাবেন না আবার৷ আপনার অনেক প্রোফাইল থাকলেও সবগুলি বিজনেস কার্ডে উল্লেখ না করে চয়েসের আধিক্যে যেন কেউ অনিশ্চয়তায় না ভুগে সেদিকে খেয়াল রাখবেন এবং যেটি গ্রাহকেরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে সেই মিডিয়াটিকেই গুরুত্ব দিবেন। এতে করে আপনাকে খুঁজে পেতে গ্রাহকের খুব একটা সময় লাগবে না।
যোগাযোগ
বিজনেস কার্ড ডিজাইন করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশ প্রফেশনাল হতে হয় এই যোগাযোগ মাধ্যম ঠিক করতে গিয়ে। যখন আপনি বিজনেস কার্ড ডিজাইনিংযের অর্ডার নিবেন তখন ক্লায়েন্টের সব যোগাযোগ মাধ্যম আপনি জেনে নিবেন ঠিকই। তবে সব মিডিয়া ব্যবহার করতে যাবেন না যেনো! এটি আনপ্রফেশনাল লাগে। এক্ষেত্রে আপনি মেইল, ফোন নাম্বার বা টেলিফোন নাম্বারকে অগ্রাধিকার দিবেন। সম্ভব হলে ওয়েব এড্রেসও মেনশন করে দিতে পারেন। মনে রাখবেন বিজনেস কার্ডে সবসময় সবসময় পার্সোনাল ও ডাইরেক্ট কন্টাক্ট ইনফরমেশন ব্যবহার করলে কার্ডটিতে প্রফেশনাল লুক আসে।
প্রোগ্রামিং কি? প্রোগ্রামিং করে কত টাকা আয় করা যায়?
বিজনেস কার্ড ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায়?
বিজনেস কার্ড ডিজাইন করে আপনি মাসে ২০০-৩০০$ ইজিলি ইনকাম করতে পারেন। এক্ষেত্রে এটি পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনি পার ডিজাইনে কত টাকা চার্জ করতে চাচ্ছেন তার উপর। আপনার বিভিন্ন টাইপের বিজনেস কার্ড ডিজাইনিংয়ের প্রাইজ বিভিন্ন মানের হতে পারে। ডিজাইনিং যদি হাই কোয়ালিটির হয় তাহলে সেলার তা ইজিলি হাই প্রাইজ দিয়ে কিনতে চাইবে এবং আপনিও মান্থলি হাই রেঞ্জের অর্থ ইনকাম করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই নিজের মাঝে থাকা স্কিলের দিকে নজর দিতে হবে। যেনো তেনো ডিজাইন করে কখনোই হাই প্রাইজ চাওয়া যাবে না।
কাজ জানলে এই সেক্টরে ইনকামের কমতি হবে না। কেননা যেখানে আজকে থেকে ৮/১০ বছর আগেও মানুষ বিজনেস কার্ড ডিজাইন এর সম্পর্কে খুব একটা জানতো না সেখানে এই বিজনেস কার্ডের চাহিদা যে হারে বেড়েছে সে হারে কোয়ালিটিফুল ডিজাইনারের পরিমাণ বাড়ে নি। এদিক দিয়ে ভালোভাবে ডিজাইনিং করতে জানলে প্রচুর কাজ কিন্তু আপনার কাছেই ঘুরে-ফিরে আসবে। ফলে ইনকামের পরিমাণটাও থাকবে বেশি। মূলত এ-কারণেই বলা চলে এই সেক্টরে প্রচুর টাকা। তবে যদি আপনি ধরতে পারে সব আপনার! আর কাজ না শিখে আকাশে উড়লে কিছুই আপনার নয়!
যারা গ্রাফিক্স ডিজাইনিং সেক্টরকে ভালোবাসেন এবং এখানে ক্যারিয়ার গড়তে চান তারা বিজনেস কার্ড ডিজাইনিং দিয়েই শুরু করতে পারেনম বিভিন্ন ফ্রি রিসোর্সের সাহায্য নিয়ে প্র্যাকটিস করতে করতে পোর্টফোলিও রেডি করুন। মার্কেটপ্লেসে একাউন্ট করে সেসব সেল করুন। সেই অর্থ দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনিংয়ের বাকি সেক্টরগুলিকেও আয়ত্তে নিয়ে আসুন। এতে করে ইজিলি গ্রাফিক্স ডিজাইনিং সেক্টর আপনার ক্যারিয়ারের দাস হয়ে যাবে। আপনি হবে গ্রাফিক্স ডিজাইনিং সাম্রাজ্যের শক্তিমান রাজা!