You are here
Home > অনলাইন ইনকাম > ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কি? এদের মধ্যে পার্থক্য কি কি?

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কি? এদের মধ্যে পার্থক্য কি কি?

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং

 

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিংকে অনেকেই একই মনে করে থাকে। যা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজ অনেকেই করার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরটিও কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই। বস ও অফিসের গন্ডিতে নিজের কর্মজীবনকে আবদ্ধ না রেখে কাজের স্বাধীনতার সাহায্যে ক্যারিয়ারে সফল হতে পারার পথ হলো আউটসোর্সিং। অন্যদিকে ঘরে বসে নিজের ইচ্ছেমতো সময়ে অন্য গ্রাহকের কাজ অনলাইনে করারই হলোই ফ্রিল্যান্সিং। আজ আমরা জানবো ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং কি? এদের মধ্যে পার্থক্য কি? কি? সে সম্পর্কে!

চলুন দেরি না করে রিসার্চের কাজে নেমে পড়ি এবং সঠিক তথ্য জেনে নিই৷

জেনে নিন ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার সম্পূর্ণ গাইডলাইন

 

ফ্রিল্যান্সিং কি?

কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অধীনে না থেকে নিজের মতো করে যারা এক ধরণের কাজ করেন তাদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে শীর্ষে থাকা কয়েকটি কাজের মধ্যে অনলাইনে করা এই ফ্রিল্যান্সিং যারা করে তাদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সার। একজন ফ্রিল্যান্সার ফ্রিলান্সিং কি এই বিষয়ের উপর নিজের দক্ষতা অর্জন করা ছাড়া কখনোই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করে ইনকাম জেনারেট করতে পারবে না।

বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে কাজ পেয়ে একজন ফ্রিল্যান্সার নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলে। চাইলে ফ্রিল্যান্সারেরা বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসের বাইরেও বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে কাজ জোগাড় করে সে-সব করতে পারে। পাশাপাশি ভালোই ইনকাম জেনারেট করতে পারে। তবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের কাজটি মূলত নিজের বিজনেস কিংবা নিজের কাজ রিলেটেড হলে তবেই তাকে ফ্রিল্যান্সিং বলা চলে।

চাকুরি করা ব্যক্তিকে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত অফিসে গিয়ে এক ধরণের কাজ করতেই হবে, এমন সিচুয়েশন থাকে। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সেই অসুবিধা নেই। নিজের কাজ নিজের সময় অনুযায়ী নিজের মতো করে কাজ করা যায় এই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে।

 

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কিভাবে শুরু করবেন?

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কিন্তু হুট করেই শুরু করা যায় না। এটি শুরু করতে হলে আপনাকে অবশ্যই কিছু স্টেপ ফলো করে তবেই সামনে আগাতে হবে। আপনি ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কতটুকু কাজ করতে চান? কতটা সময় দিতে চান..সবকিছু আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। মনে রাখবেন লক্ষ্যহীন কোনো কাজে সফলতা অর্জন করা বেশ কঠিনই বটে। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে হলে হলে আপনাকে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে সেগুলি হলোঃ-

নিজের প্ল্যানিং সেট করে নিন। ফুল টাইমার ফ্রিল্যান্সার হবেন নাকি পার্ট টাইমার ফ্রিল্যান্সার তা ডিসাইড করে নিন।

  • ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরের Logo Designing, SEOServices, Video Creating, Video Editing, Content Marketing কোন কাজটি করে আপনি ইনকাম জেনারেট করতে চান তা ডিসাইড করে নিন।
  • আপনার পুরো অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং জ্ঞান রয়েছে এমন কাজে মনোযোগ দিন।
  • যেই বিষয়ে আপনার প্রচন্ড আগ্রহ রয়েছে সেই সেক্টরে আগান।

 

ফ্রিল্যান্সিং থেকে কত টাকা আয় করা যায়?

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আপনার কাছে যত বেশি কাজ আসবে এবং যত বেশি কাজ আপনি করে দিতে পারবেন তত পরিমাণই ইনকাম আপনার ঝুলিতে থাকবে। এমনও ফ্রিল্যান্সার আছে যারা ৬০ লক্ষ টাকা প্রত্যেক বছরে আয় করছে এই সেক্টর থেকে। আপনার যত বেশি অভিজ্ঞতা থাকবে আপনার সার্ভিসের প্রাইজও তত বেশি বাড়বে। তবে শুরুতে আপনি মান্থলি ২০,০০০/- থেকে ৫০, ০০০/- ইনকাম জেনারেট করতে পারেন৷

 

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কি কি কাজ রয়েছে?

ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে অনেক কাজ রয়েছে। তবে কাজগুলি যদি আপনি নিজের জন্যই করেন তবেই তা ফ্রিল্যান্সিং কাজ হিসেবে গণ্য হবে। এ পর্বে চলুন কিছু ফ্রিল্যান্সিং কাজ নিয়ে আলোচনা করি।

 

ওয়েব ডেভলপমেন্ট

আপনারা নিশ্চয় ওয়েব ডেভলপমেন্টের কথা শুনেছেন! এটিও একটি ফ্রিল্যান্সিং কাজ। তবে তা যদি নিজের ওয়েবসাইটের জন্য করা হয়ে থাকে তবেই তা ফ্রিল্যান্সিং হিসেবে গণ্য হবে। ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট করে আপনি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে তা থেকে প্রোডাক্ট সেলিং কিংবা প্রমোটিং করে ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।

আর্টিকেল রাইটিং

যারা লিখতে ভালোবাসেন তারা নিজেদের আর্টিকেল লিখেও তা থেকে আয় করতে পারেন। নিজের ওয়েবসাইট খুলে ইজিলি এসব আর্টিকেলের সাহায্য ভিজিটর এনে এডসেন্স থেকে ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। তবে তার আগে আপনাকে একটি কোর্স করে নিতে হবে।

গ্রাফিক্স ডিজাইনিং

গ্রাফিক্স ডিজাইনার তখনই একজন ফ্রিল্যান্সার যখন সে নিজের ডিজাইন ফ্রিল্যান্স ওয়েতে বিভিন্ন সাইটে সেল করে কিংবা নিজের মার্কেটিংয়ের কাজে ব্যবহার করে। লোগো থেকে শুরু করে বিভিন্ন ডিজাইনিং সেলিংই হতে পারে একজন গ্রাফিক্স ফ্রিল্যান্সারের ইনকামের উৎস।

আউটসোর্সিং কি?

ইন্ডাস্ট্রিটি ইন্টারনেট মাধ্যমের উপর নির্ভরশীল হয়ে৷ সততার ও আত্মবিশ্বাসের সাথে কাজ করে ইনকাম জেনারেট করার প্রসেসই হলো আউটসোর্সিং। এই সেক্টরের যে-কোনো কাজ কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কর্মচারীকে দিয়ে করানো হয়ে থাকে। এই ডিজিটাল যুগে চাহিদাপূর্ণ ক্যারিয়ারগুলোর মধ্যে একটি হলো এই আউটসোর্সিং। দক্ষ, ধৈর্য্যশীল, এবং সৃষ্টিশীল একজন আউটসোর্সারের ইনকাম নিয়ে কখনো ভাবতে হয় না।

 

আউটসোর্সিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কি কি করতে হবে?

বেশ কিছু জিনিসের হরহামেশাই প্রয়োজন হয়ে থাকে এই আউটসোর্সিং সেক্টরে। চলুন জেনে নিই আউটসোর্সিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে হলে কি কি করতে হবে সে-সম্পর্কে।

  • নতুন কাজ শিখতে অনাগ্রহ প্রকাশ করা যাবে না।
  • নিয়মিত নিজেকে নতুন নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে নিজেকে আরো বেশি দক্ষ করে তুলতে হবে।
  • ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকার মন মানসিকতা থাকতে হবে।
  • কাজ পেলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার মন-মানসিকতা থাকতে হবে।
  • যে বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়ে নিজের জ্ঞানকে আগের চাইতে আরো ধারালো করে তুলতে হবে।

 

আউটসোর্সিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায়?

একজন আউটসসোর্সার হিসেবে আউটসোসিং করে মাসে আপনি ইজিলি 100-300000 টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন। আপনি যদি নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারেন তাহলে এই পরিমাণ ইনকাম আপনার জন্য কোনো ব্যাপারই না।

 

আউটসোর্সিংয়ে কি কি কাজ রয়েছে?

আউটসোর্সিং সেক্টরে অনেক কাজ রয়েছে। মূলত গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী এই কাজগুলি একজন আউটসোর্সারকে করে দিতে হয়। যেমনঃ-

  • কাস্টমার সার্ভিস
  • ওয়েব ডেভেলাপমেন্ট
  • ওয়েবসাইট মেইনটেইনেন্স
  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • অ্যাকাউন্টিং এবং বুককিপিং
  • সেলস এবং মার্কেটিং
  • কপিরাইটিং
  • ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচারিং
  • অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাসিস্টেন্স
  • ব্যাক অফিস অ্যাসিস্টেন্স
  • কাস্টমার সার্ভিস

 

ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর মধ্যে পার্থক্য কি কি?

খুব সহজ করে পার্থক্য করার চেষ্টা করলে বলতে হয় একজন ফ্রিল্যান্সার নিজেই নিজের আইটি রিলেটেড কাজ করে থাকে এবং যে আউটসোর্সিং করে সে অন্যের অনলাইন রিলেটেড কাজ করে ইনকাম জেনারেট করে থাকে। একজন মানুষ কর্তৃক কর্মকান্ড যার নির্ধারিত কোন নিয়োগকর্তা থাকে না এমন কাজ হলো ফ্রিল্যান্সিং।

যে কাজে একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে চুক্তিবদ্ধ করে মূল কাজটি সমন্বয় এবং সম্পন্ন করে এবং একটি সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় কাজ শেষ হয় সেই কাজটিকেই মূল বলা হয় আউটসোর্সিং এর কাজ। আপনি যখন ফ্রিল্যান্সিং করবেন তখন কোনো কাজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে করতে বাধ্যগত হবেন না। কিন্তু আউটসোর্সিং করতে গেলে কাজ নিয়ে ফেলার পরে পছন্দ না হলেও সেই কাজটি আপনাকে করতে হবে। যদিও কাজটি আপনার পার্সোনাল না হয়ে হবে একটি কোম্পানির নিজেদের কাজ।

ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে সবসময় কাজ পাওয়া না গেলেও কিন্তু আউটসোর্সিং সেক্টরে ঠিকই মান্থলি কাজের জন্য নিজেকে একটি কাজে যুক্ত করে ফেলতে পারবেন। এক্ষেত্রে মান্থলি পেমেন্ট নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। মাস শেষ হলেই ইনকাম হাজির।

 

ইতি কথা

দেখতে দেখতে আমরা আর্টিকেলের শেষ পর্যায়ে চলে এলাম। এই ডিজিটাল যুগে ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং এর মত ব্যাপারগুলোতে নিজেকে যুক্ত করা মানেই বুদ্ধিমানের কাজ। ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং মূলত একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। সুতরাং কাজ শিখতে পারলে আপনি যেকোনো সেক্টর ব্যবহার করেই ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।

Facebook Comments
Top