You are here
Home > জরুরী টিপস > কিভাবে ভোটার হবো? নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

কিভাবে ভোটার হবো? নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড

 

ভোটার আইডি কার্ড হলো আমাদের যাবতীয় জাতীয় কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ রসদ। যা প্রতিটি পদক্ষেপেই একজন নাগরিকের দরকার পড়ে! এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। সেই সময়টির আগে কেউ কখনোই এই ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাবে না। ফলস্বরূপ ভোটার হিসেবেও স্বীকৃতি পাবে না। তবে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ভোটার হবেন এবং ভোটার কার্ড ব্যবহার করার নতুন নিয়ম সম্পর্কে।

 

ভোটার হতে কি কি ডকুমেন্টস লাগে?

সরকারী বেসরকারী যে কোন দাপ্তরিক কাজে প্রয়োজনীয় ভোটার কার্ড পেতে চাইলে আপনাকে সবার আগে ভোটার হতে হবে। এক্ষেত্রে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসের দরকার পড়ে। আর্টিকেলের এই পর্যায়ে আমরা বিস্তারিত জানবো ভোটার হতে কি কি ডকুমেন্টস লাগে সে-সম্পর্কে।

আপনি যদি নতুন ভোটার হতে চান তবে আপনার ক্ষেত্রে নিচের ডকুমেন্টসগুলির প্রয়োজন পড়তে পারে:

জন্ম সনদ:

এক্ষেত্রে আপনাকে কেবলমাত্র জন্মসনদের ফটোকপি দিলেই চলবে। মেইন কপি দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। বলে রাখা ভালো এই সনদটিতে উল্লেখিত তথ্যগুলিই ব্যবহার করা হবে আপনার নতুন ভোটার আইডি কার্ডে।

অভিবাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি:

মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার পড়বে নতুন কোনো ভোটার আইডি কার্ড তৈরির আবেদন করার ক্ষেত্রে। যা আপনার জন্মসনদের সত্যতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

শিক্ষা-সম্পর্কিত সনদ:

নতুন ভোটার কার্ড তৈরিতে কিংবা আবেদন করতে শিক্ষা সম্পর্কিত সনদ আবশ্যক নয়। তবে যারা এখনো শিক্ষার্থী বা নিজেদের পড়াশোনার সাথে যুক্ত রেখেছে তাদের এসএসসি সার্টিফিকেটের ফটোকপি দিতে হবে। যা পেশ করা শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রত্যয়ন পত্র:

এই পর্যায়ে আপনাকে একটি প্রত্যয়ন পত্র দিতে হবে। যা হবে চেয়ারম্যান কতৃক প্রাপ্ত বা অনুমোদিত। এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাহায্য নিতে হবে। অন্যথায় তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।

জমিসংক্রান্ত দলিল:

নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস হিসেবে জমির কাগজপত্র আবশ্যক নয়। চাইলে আপনি এটি বাদও দিতে পারেন। তবে যদি একান্তই দিতে হয় তবে পারিবারিক বা যেখানে আপনার মা-বাবার নাম জড়িত সেখানকার দলিল প্রদান করতে হবে।

বিল:

বিলের কাগজপত্রকেও নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এডিশনাল ডকুমেন্টস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যা না দিলেও চলে। যারা দিবেন বলে ভেবে রেখেছেন তাদের বিলের কাগজপত্র হিসেবে বিদ্যুৎ বিলের ডকুমেন্টস দিতে হবে।

রক্তের গ্রুপ সনদ:

রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে তার একটি ডকুমেন্টস বা প্রমাণ শো করাতে হবে আপনাকে। এক্ষেত্রে যারা এখনো রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করেননি তারা অবশ্যই রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করিয়ে তবেই ভোটার হওয়ার আবেদন করতে হবে। কেননা আবেদনের ক্ষেত্রে এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্টস হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

উল্লেখিত সকল তথ্য বা ডকুমেন্টস আপনাকে নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে প্রদান করতে হবে।

 

ভোটার হওয়ার যোগ্যতা কি কি?

বাংলাদেশ নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছে। না মেনে কেউই ভোটার হওয়ার উদ্দেশ্যে আবেদন করতে পারবে না। চলুন এই পর্যায়ে জেনে নেওয়া যাক নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্যতাগুলি কি হতে পারে:

  • আপনাকে বাংলাদেশের প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক হতে হবে
  • দেশের অভ্যন্তরেই বসবাস করছেন, এমন পরিস্থিতিতে থাকতে হবে
  • আবেদনকারীর ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হতে হবে

আশা করি ভোটার হওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন। এই পর্যায়ে যদি উপরের সমস্ত যোগ্যতা আপনার সাথে মিলে যায় তবে দ্রুত ভোটার হওয়ার আবেদন করতে হবে।

 

কিভাবে ভোটার হবেন?

ভোটার হতে চাইলে সর্বপ্রথম আপনাকে ভোটার হওয়ার উদ্দেশ্যে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি উপজেলা নির্বাচন অফিসের সাহায্য নিতে পারেন। সেখানে গিয়ে আবেদনের সাথে সম্পৃক্ত যাবতীয় কাজ সেরে নিতে পারেন।

উপরে উল্লিখিত ভোটার হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস পড়েছেন নিশ্চয়! সেসব ডকুমেন্টস অবশ্যই সাথে করে নিয়ে যাবেন। পরবর্তী কাজ উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারাই করে দিবেন। এক্ষেত্রে যাবতীয় তথ্য প্রদানে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। যাতে কোনো তথ্য ভুল না হয়।

 

অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম কি?

আপনি কি জানেন আজকাল ঘরে বসেই অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার কাজ সেরে ফেলা যায়? হ্যাঁ! ডিজিটাল যুগের বদৌলতে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। অন্যসব উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশও ঘরে বসে অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার প্রসেসের ব্যবস্থা করেছে। বিস্তারিত জানতে সাথেই থাকুন।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড আবেদন করার জন্য সবার আগে আপনার মোবাইল কিংবা পিসি বা ল্যাপটপে ব্রাউজারে চলে যেতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড রেজিষ্ট্রেশন ফরম খুঁজে বের করতে হবে। এই কাজটি খুবই সহজ। যে কেউই সার্চ করলে পেয়ে যাবে।

ফরমটি খুঁজে পেলে ধাপে ধাপে তা পূরণ করতে হবে। এতে থাকা প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সঠিকভাবে বসাতে হবে। বলে রাখা ভালো এই ফরমটি পূরণ করা একদমই সহজ এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। যাদের ইতিমধ্যেই ১৮ বছর হয়ে গেছে তারা দ্রুত আবেদন কাজ সেরে ফেলতে পারেন।

রেজিষ্ট্রেশন ফরমটি ফিলআপ করার প্রথম কাজ হলো ব্যাক্তিগত তথ্য সঠিকভাবে বসানো। স্টেপ বাই স্টেপ তারা আপনার যেসমস্ত ব্যাক্তিগত তথ্য চাইবে তার প্রতিটি তথ্য সঠিকভাবে বসাতে হবে।

বাংলা এবং ইংরেজি যে ভাষায় যে তথ্য চাইবে সে ভাষায় সে তথ্যটি বসানোর সাথে সাথে ভেরিফাইও করে নিতে হবে। ধরুন আপনি আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে এসএসসির ব্যাপারটি লিখলেন। এক্ষেত্রে আপনাকে এসএসসির সনদের স্ক্যাপ কপি আপলোড করে তা ভেরিফাই করে নিতে হবে।

সবকিছু ভেরিফাই হয়ে গেলে ওবং সঠিকভাবে ওকে আসলে তারা আপনাকে একটি পিডিএফ ফাইল পাঠিয়ে দিবে বা যেখানে আবেদন করেছেন সেখানেই পেয়ে যাবেন। এই পর্যায়ে ফাইলটি আপনাকে ডাউনলোড করে মোবাইল বা পিসিতে সেভ করে নিতে হবে।

একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে আপনাকে সেই পিডিএফ ফাইলটি কোনো একটি ফটোকপির দোকানে গিয়ে কপি করে নিতে হবে। উক্ত কপিটি সাথে করে নিয়ে আপনাকে সরাসরি চলে যেতে নিকটস্থ উপজেলা নির্বাচন অফিসে।

নির্বাচন অফিস আপনার যাবতীয় তথ্য পূনরায় ভেরিফাই করবে। ফাইলটি পুরোপুরি ভালোভাবে চেক করা হবে এবং কোনো ভুল থাকলে তা পূনরায় সংশোধন করে নেওয়া হবে।

বলে রাখা ভালো এই ভেরিফিকেশন সিস্টেম অনেকসময় ১৫ দিন কিংবা ১ মাসের বেশি সময়ও নিতে পারে। সুতরাং খামোখা টেনশন বা অযথা অফিসে ঘুরাঘুরি হতে বিরত থাকতে হবে।

ব্যাক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি আপনার ঠিকানাও ভেরিফাই করা হবে। যে ঠিকানার কথা উল্লেখ করেছেন তা মিল আছে কিনা চেক করা হবে।

সবশেষ ভেরিফাই হিসেবে আপনাকে কল করা হবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দ্রুততার সাথে আপনার আইডি কার্ডটি তৈরি করে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে। বলে রাখা ভালো এক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে হবে। সুতরাং অস্থির হওয়া যাবে না।

 

নতুন ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম কি?

নতুন ভোটার আইডি বের করার আগে তা এসেছে বা বের হয়েছে কিনা চেক করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে:

  • প্রথম ভোটার হওয়ার জন্য একটি কাগজের ফরম পূরণ করেছিলেন সেই ফর্মের নিচের অংশটি নিন।
  • উপরে থাকা ফরম নাম্বানটি দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডটি চেক করে নিন।

চেক করা হয়ে গেলে:

  • আপনাকে NID Wallet অ্যাপসটি ডাউনলোড করে জাতীয় পরিচয়পত্র একাউন্টে রেজিষ্ট্রেশন বা লগইন করতে হবে।
  • স্লিপ নাম্বার লিখে উপজেলা, জেলা, বিভাগ সেট আপ করে মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।
  • ভেরিফিকেশন পর্ব শেষ করে পাসওয়ার্ড সেট করলে সাথে সাথে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করার অপশন পেয়ে যাবেন।

আশা করি একজন নতুন ভোটার হিসেবে প্রয়োজনীয় গাইডলাইন ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছেন। এরপরও হয়তো এ-সম্পর্কে অনেকের মনেই প্রশ্ন থেকে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত আছি আমরা। সরাসরি কমেন্ট করুন ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কিত আপনার মনের যাবতীয় প্রশ্ন!

Facebook Comments
Top