ভালো কম্পিউটার চেনার উপায়: কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ আমরা যাই কিনতে চাই না কেনো অবশ্যই আমরা ভালো জিনিস টাই কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করব। কিন্তু, কিভাবে বুঝবেন বা ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় কি সেটা সম্পর্কে আপনি যদি ভালো ধারণা না রাখেন তাহলে ভালো কম্পিউটার চিনতে আপনার অসুবিধা হবে।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করবো ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় কি এবং এভাবে ভালো কম্পিউটার চেনা যায়। ভালো কম্পিউটার বাছাই করার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো আপনাদের সামনে এই ব্লগে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। চলুন তাহলে জেনে নেই ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় গুলো কি কি।
ভালো কম্পিউটার চেনার উপায়
ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় অনেক আছে। কম্পিউটার কেনার পূর্বে আগে বিবেচনা করা উচিৎ কি কি কাজে কম্পিউটার ব্যবহার হবে। তারপর আসে বাজেট। ভালো কম্পিউটার কিনতে হলে প্রথমে কি কাজে কম্পিউটার ব্যবহার হবে সেটা বিবেচনা করে তারপর বাজেট নির্ধারণ করে সেরা কম্পোনেন্ট গুলো বাছাই করতে হবে।
ভালো কম্পিউটার বাছাই এর ক্ষেত্রে প্রসেসর, মাদারবোর্ড, র্যাম, এসএসডি বা হার্ডডিস্ক সহ অনেক কিছু দেখতে হয়। মূলত এই ব্লগে আমরা সে সকল বিশয় নিয়ে আলোচনা করবো যা ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় হতে পারে। চলুন এবার আমরা ফিরে যাই আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়ে।
এই ব্লগে যা যা থাকছে,
- ভালো কম্পিউটার চেনার উপায়।
- ভালো কম্পিউটার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো জানা জরুরী।
- ভালো কম্পিউটারের দাম কত।
- ভালো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট ।
- ভালো বৈশিষ্ট কম্পিউটারে যা যা থাকা প্রয়োজন।
- ভালো কম্পিউটার চেনার উপায়।
- শেষাংশ
ভালো কম্পিউটার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো জানা জরুরী
ভালো কম্পিউটার নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে বিষয় গুলো জানা জরুরী তার নিম্নরূপ
১। প্রসেসর
২। মাদারবোর্ড
৩। হার্ডডিস্ক
৪। মনিটর
৫। র্যাম
৬। ভিডিও বা গ্রাফিক্স কার্ড
৭। মাউস ও কি-বোর্ড
ভালো কম্পিউটারের দাম কত
কম্পিউটারের বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কম্পিউটার পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত বাজারে নতুন নতুন কম্পিউটার আসছে। সেক্ষেত্রে ভালো কম্পিউটার বাছাই করা বা কোন কম্পিউটারের দাম কেমন সেটা নির্বাচন করা কিছুটা কঠিন।
তবে ভালো কম্পিউটারের দাম আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার হতে পারে। সাধারণত মোটামুটি সব ধর ধরনের কাজ করা যায় এমন কম্পিউটার ৬০ হাজার টাকার আশেপাশে পাওয়া যায়। বর্তমান সময়ে এই বাজেটে বিভিন্ন ব্র্যান্ড যেমন, আসুস, ডেল ইত্যাদি ব্র্যান্ডের কম্পিউটার পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভালো কম্পিউটারের দাম কত তা এই মুহূর্তে বলা কিছুটা কঠিন বটে।
ভালো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট
ভালো মানের কম্পিউটার চেনার জন্য কম্পিউটারের অনেকগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করতে হয়। কিন্তু, আপনি সবসময় সকল বৈশিষ্ট্য গুলো বিবেচনা করে ভালো কম্পিউটার নির্বাচন করতে পারবেন না। এছাড়া আপনি সকল বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করে ভালো কম্পিউটার বাছাই করতে গেলে অনকেটা কনফিউজড হয়ে যেতে পারেন। তবে অভিজ্ঞতার জন্য ভালো কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য গুলো জেনে রাখতে পারেন।
ভালো বৈশিষ্ট সম্পন্ন কম্পিউটারে যা যা থাকা প্রয়োজন।
১। ভালো মানের প্রসেসর।
২। মানসম্মত মাদারবোর্ড।
৩। র্যাম ও হার্ডডিস্ক ।
৪। ভিডিও বা গ্রাফিক্স কার্ড।
৫। অপারেটিং সিস্টেম।
৬। ভালো মনিটর।
চলুন এবার আমরা দেখে নেই ভালো কম্পিউটার ভালো কম্পিউটার নির্বাচন করার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয় এবং কোন কোন বিষয়বস্তু প্রয়োজন।
ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় ২০২৩
ভালো কম্পিউটার কেনার আগে আপনাকে আপনার কাজের ভিত্তিতে কম্পিউটার নির্ধারণ করে নিতে হবে। তবেই আপনি ভালো কম্পিউটার চিনতে পারবেন সহজেই। ভালো কম্পিউটার কেনার আগে বেশ কিছু বিষয়ে লক্ষ রাখা প্রয়োজন। কেননা আপনি যদি ভালো কম্পোনেন্ট গুলো বাছা করে নিতে না পারেন তাহলে আপনি পারফর্মেন্স এ কিছুটা ঘাটতি বা ল্যাগ ইস্যু ফেস করতে পারেন। তাই এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কম্পোনেন্ট বাছাই করে নিতে হবে।
প্রসেসর : কম্পিউটারের কথা আসলে প্রথমেই মাথায় আসে প্রসেসরের কথা। কেননা প্রসেসর বা CPU হলো একটি কম্পিউটারের প্রধান অংশ। কম্পিউটারের যতগুলো কাজ রয়েছে সেগুলো সাধন হয় এই প্রসেসর বা CPU এর মাধ্যমেই।
বর্তমানে জনপ্রিয় প্রসেসর তৈরিতে রয়েছে Intel ও AMD এছাড়াও বাজারে অনেক প্রসেসর রয়েছে। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে এই দুটি কোম্পানি রয়েছে। বেশিরভাগ কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে Intel অথবা AMD এর প্রসেসর ব্যবহার করা হয়। প্রসেসরের স্পীড যত বেশি হবে প্রসেসর ততো বেশি বেশি কাজে সক্ষম হবে। কোর প্রসেসরের ক্ষেত্রে কোর যত বেশি হয় প্রসেসর তত বেশি ভালো হয়। যেমন, Core i3, Core i5, Core i7, Core i9 ইত্যাদি প্রসেসর গুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং সবথেকে ভালো চলছে। তবে এই প্রসেসরের দাম কিছুটা বেশি তবে দাম এখানে জেনারেশনের ভিত্তিতে কিছুটা কম বেশি হয়ে থাকে।
মাদারবোর্ড : কম্পিউটারের মেইন বোর্ড বা মাদারবোর্ড হল কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে ভালো মাদারবোর্ড নির্ধারণের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন DDR4 RAM, M.2 SSD এবং NVME M.2 সাপোর্ট করে। এতে করে যদি আপনি ভবিৎষতে আপনার কম্পিউটার আপডেট করতে কোনো সমস্যা না হয়। এটা হলো ভালো কম্পিউটার নির্বাচন করার আরও একটি বৈশিষ্ট্য।
র্যাম ও হার্ডডিস্ক : র্যাম সাধারনত কম্পিউটারের স্পীড বুস্ট করতে সাহায্য করে এবং ডেটা সংরক্ষণের হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটার কতটা দ্রুত কাজ করবে সেটা নির্ভর করে র্যামের উপর। র্যাম যত বেশি হবে কম্পিউটার ততোই দ্রুত কাজ করবে। ভালো পারফরম্যান্স এর জন্য র্যামের বিকল্প নেই। আপনি চাইলে ৪, ৮, ১৬, ৩২ জিবি পর্যন্ত র্যাম ব্যবহার করতে পারবেন।
কম্পিউটারের স্পীড বাড়াতে এসএসডি ও ব্যবহার করা হয়। তবে আপই চাইলে হার্ডড্রাইভ ও ব্যবহার করতে পারবেন। হার্ড ড্রাইভ যত বেশি হবে আপনি ততো বেশি ডেটা সংরক্ষণ করতে পারবেন। অনেক সময় আমরা আমাদের কম্পিউটারে ভিডিও, ছবি, অডিও, ডকুমেন্টস সহ অনেক কিছু স্টোর করে রাখতে চাই। আর এই ফাইল গুলো যেখানে স্টোর করে রাখা হয় তাকে হার্ড ড্রাইভ বলা হয়। আপনি যত বেশি হার্ডড্রাইভ ব্যবহার করবেন ততো বেশি ডেটা সেভ করে রাখতে পারবেন। তবে মনে রাখার বিষয় হলো বাজারে ১৬০ জিবি থেকে ৩ টেরাবাইট পর্যন্ত পাওয়া যায় এবং হার্ডড্রাইভ এর RPM যত বেশি হবে ফাইল ট্রান্সফার ততই দ্রুত সময়ের মধ্যে হয়ে যাবে। তাই যে হার্ডড্রাইভ গুলোর RPM বেশি সেই সকল হার্ডড্রাইভ নির্বাচন করাই উত্তম।
ভিডিও বা গ্রাফিক্স কার্ড : আমাদের মধ্যে অনেকেই গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং বা গেমিং করার জন্য কম্পিউটার কিনে থাকেন। সেক্ষেত্রে গ্রাফিক্স কার্ড অনেক জরুরি। এতে করে ভিডিও বা গেমিং এ অন্য ধরনের কালারের সাথে স্মুথ ভিডিও দেখতে পারবেন ও কাজ করতে পারবেন।
বাজারে বর্তমানে RTX ও GTX এর ভালো মানের গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখানে বিভিন্ন ভেরিয়েন্টের উপর দাম নির্ধারণ হয়ে থাকে।
কি-বোর্ড ও মাউস : বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কি-বোর্ড ও মাউস বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে। তবে মেকানিক্যাল কি-বোর্ডে কি প্রেস করে কিছুটা অন্যরকম অনুভূতি পাওয়া যায়। এছাড়া বাজারে বর্তমানে বেশ কিছু কোম্পানির RGB গেমিং কি-বোর্ড পাওয়া যাচ্ছে। তবে কেনার ক্ষেত্রে দেখেশুনে মাউস ও কি-বোর্ড নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
মনিটর : কম্পিউটারের প্রধান আউটপুট হলো মনিটর। মনিটর ছাড়া কম্পিউটারে আপনি কি কি কাজ করছেন সেটা দেখতে পারবেন না। বর্তমানে বাজে বেশ কিছু ব্র্যান্ডের মনিটর পাওয়া যায় যার মধ্যে Samsung, ASUS, HP, LG ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়। তবে মনিটর নেওয়ার আগে আপনার যা যা জানা দরকার।
১। LCD মনিটর গুলো স্কয়ার এবং ওয়াইড স্ক্রিন এই দুই ধরনের হয়ে থাকে। এখান থেকে আপনার প্রয়োজন অনুসারে স্ক্রিন সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
২। LED মনিটরে তুলনামুলক ভাবে LCD অপেক্ষা ভালো ছবি দেখা যায়। এছাড়া LED মনিটর দেখতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হয়।
টিপসঃ বর্তমানে অনেক ব্র্যান্ডের মনিটর পাওয়া গেলেও কিছু মনিটর রয়েছে যেখানে ইন-বিল্ড TV Tuner থাকে। আপনি যদি আলাদা ভাবে তিভি ব্যবহার না করে এই মনিটরে টিভি ও কম্পিউটার ব্যবহার করতে চান তাহলে এধরনের মনিটর পছন্দ করতে পারেন। আর একটি বিশয় হলো মনিটরের ক্ষেত্রে response Time যত কম হবে ততই ভালো হবে। তাই অবশ্যই বুঝে শুনে মনিটর পছন্দ করবেন।
আমাদের শেষকথা
প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেল টি পরার মাধ্যমে আপনারা ভালো কম্পিউটার চেনার উপায় সম্পর্কে ভালো একটি ধারণা পেয়েছেন এবং আমাদের এই ব্লগ টি আপনারা পছন্দ করেছেন। মোটামুটি এই ছিল আমাদের আজকের আয়োজন। পরবর্তী তে আপনারা কোন কোন বিষয়ে জানতে চান কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।