আমরা সবাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এর সাথে কমবেশি পরিচিত। কিন্তু আমরা কি জানি আমাদের জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কতটুকু? কিংবা আমরা কি জানি এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়! না জানলেও এই ব্যাপারে আমাদের কিন্তু জেনে রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে এই ডিজিটাল সময়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা রাখতে না পারলে সময়ের গভীরে আমরা তলিয়ে যাবো। চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায়
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?
একদম সরাসরি বলতে গেলে বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলোর ব্যাবহারিক প্রয়োগকেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়। বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার নিবিড় সম্পর্ক তৈরিতে এই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই পুরো পৃথিবী জুড়ে খুব দ্রুত ও সহজে তথ্য আদান-প্রদান করা ঠিক তখনই সম্ভব হয় যখন আপনি এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহযোগিতা নিতে জানবেন এবং নিতে পারবেন।
এই ডিজিটাল যুগে তথ্য প্রযুক্তি কিন্তু বেশ বিস্তৃত। বেশ কিছু মৌলিক উপাদান বিদ্যমান আছে এই তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরে। আধুনিক টেলিযোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সফটওয়্যার, কোনোটাই বাদ পড়ে না এই সেক্টর থেকে। সেই সাথে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই যুগে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্য আপনাকে নিতেই হবে। এ-থেকে কিন্তু বোঝাই যাচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যাপ্তি কতটুকু পৌঁছে গেছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো?
এবার আসি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে জানার ব্যাপারে। আপনি কি বুঝতে পারছেন বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কিন্তু যথেষ্ট স্পষ্ট! হ্যাঁ! কেননা এই সেক্টরটি আমাদের জীবনের অনেকটা অংশ ইজিলি দখল করে নিয়েছে।
আপনি যদি এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে চান তবে আপনি আপনার ডেইলি রুটিনের দিকে মনোযোগী হতে পারেন। লক্ষ্য করবেন আপনার পুরো দিনটাতেই থাকছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব। সকালের এলার্ম, টিভি দেখা, সময় দেখে অফিসে যাওয়া, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সাহায্যে ফাইল তৈরি করা কোন কাজটিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির হাত নেই? এর এসব কাজ যেহেতু আমাদের প্রতিদিনকার রুটিনে থাকা আব্যশক সেহেতু নির্দ্বিধায় বলা যায় যে আমাদের জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্বকে কোনো অংশেই ছোট করে দেখা যাবে না।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায়
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা যায় তা জানতে হলে আপনাকে নিজের প্রতিদিনককার কাজগুলিকে লক্ষ্য করতে হবে। কোন কাজে কত ভাবে আপনি এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন তা খুঁজে বের করতে হবে।
ঘরে বসেই চাকরির আবেদন করে যে চাকরিটি পেয়েছেন সেই চাকরি করতে আপনার প্রতিদিনই ভোরে উঠে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হয়। অনেক সময় এলার্মের সাহায্য ছাড়া এই অফিসে সঠিক সময়ে যাওয়াটাও হয় না। খুব সহজে এবং কম সময়ে অফিসের লিখিত ফাইল অনলাইন টেক্সট ফাইলে পরিণত করার ফলে কম্পিউটার না জানা থাকলে পরবর্তীতে পড়েন মারাত্মক বিপদে! আবার মাঝেমধ্যে মনের স্বান্তনা পেতে কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাহায্য পেতে সেই মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপের সাহায্য চলে যান গুগল মামার কাছে। এসবকিছু কি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার নয়?
আবার এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে যখন আপনি নিজেকে অসুস্থ করে ফেলেন কিংবা অন্য কোনো কারণে যদি আপনার দেহে কোনো ছোট-বড় রোগ বাসা বাদে তবে আপনি ছুটে যান ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার বড় মাপের হলেও প্রথম দেখায় রোগ নির্ণয় করার ক্ষমতা রাখেন না। ফলে বিভিন্ন টেস্টের শরণাপন্ন হতে হয় আপনাকে। এক্ষেত্রেও রয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার। মোটকথা আমরা এই ডিজিটাল যুগে নিজেদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া কল্পনাই করতে পারি না।
দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কি কি?
দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব যে কতটুকু তা আমরা সকলেই বুঝতে পারছি। হাতে মোবাইল ফোন ছাড়া যেমন আমাদের একদিনও চলে না তেমনই হেডফোন ছাড়া আজকাল গান শুনেও মজা নেই! ব্লেন্ডার মেশিন ছেড়ে মশলা বাটতে আজকাল কারোরই মর সায় দেয় না। আবার যারা ফ্রিল্যান্সিং করছেন তারা সেই ল্যাপটপ – ইন্টারনেট ছাড়া নিজেদের কাজের অস্তিত্ব খুঁজেই পায় না। এসবকিছুই তো কিন্তু আমাদের প্রতিদিনকার কাহিনী! সুতরাং বুঝতেই পারছেন দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কি কি এবং তা কতটুকু স্থান দখল করে আছে!
কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কি কি?
এই ডিজিটাল যুগে কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব এবং কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বলে কখনোই শেষ করা যাবে না। যেহেতু আমরা আজকাল কর্মক্ষেত্রে এক্সট্রা সেক্টর অর্থ্যাৎ মোবাইল ফোন, ব্যক্তিগত সংগঠক এবং ডিজিটাল চ্যানেল ইত্যাদি খুব বেশি দেখতে পারছি সেহেতু কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্বকে মোটেও অস্বীকার করার কোনো চান্সই নেই। কেননা এসমস্ত ডিজিটাল এক্টিভিটিস একটি কর্মক্ষেত্রকে দ্রুত কাজ সম্পাদন করতে সাহায্য করে। মোটামুটি ব্যাপারটি কিছুটা রোবটিক্স কাজের মতোই বলা যায়।
বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে এবং ই-মেইলের মতো যোগাযোগ মাধ্যমে চাহিদা প্রচুর। পাশাপাশি প্রতিটি কোম্পানি নিজেদের কাজকে প্রসারিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব জনগণের অ্যাক্সেসকে গুরুত্বে সাথে নজরদারি করে এবং মার্কেটিং করে। এক্ষেত্রেও কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব স্পষ্টভাবে উঠে আসছে। বিভিন্ন মিটিংয়ের ক্ষেত্রে যখন বিভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টের একসাথে আলোচনার কথা উঠছে ঠিক তখনই টেলিফোন এবং টেলিকনফারেন্সের মতো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আশীর্বাদগুলোর সাহায্য নিতে হচ্ছে! এতোটুকুতেই হয়তো আপনি বুঝতে সক্ষম হয়েছেন কর্মক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কতটা কার্যকর!
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব কি কি?
এখন আমরা জানবো শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে। আপনি কি জানেন শিক্ষার্থীদের আত্মপ্রকাশ শিক্ষায় মনোযোগী হয়ে উঠার পেছনে এই ডিজিটাল যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্বগুলি কি কি এবং তা কতটা?
পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আত্মতৃপ্তি বাড়ানোর পেছনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্বকে অস্বীকার করা যাবে না। আবার প্রযুক্তিবিদ্যা আত্মতৃপ্তি আনে বলে পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের বাড়তি আগ্রহ সৃষ্টিকেও পায়ে ঠেলে পেছনে ফেলে রেখে দেওয়া যাবে না। বৌদ্ধিক ও ব্যবহারিক জ্ঞানের বিকাশ ঘটাতে আজকাল প্রযুক্তিবিদ্যা ব্যবহার করা হয় বলে দ্রুত যেকোনো টপিক সম্পর্কে স্টুডেন্টরা ইজিলি বুঝতে পারছে।
এই প্রযুক্তিবিদ্যার সাথে শিখতে শিখতে একটা সময় গিয়ে ম্যাক্সিমাম স্টুডেন্ট নিজেদের ভবিষ্যতে বিশেষজ্ঞ প্রযুক্তিবিদ হিসেবে তৈরি করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলে প্রযুক্তির দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া আমাদের এই দেশটিতে প্রযুক্তিবিদ তৈরি হওয়ার পথ অনেকটা সহজ হয়ে যাচ্ছে।
তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো কি?
তথ্য ও প্রযুক্তির ভালোদিকগুলি দেখার পাশাাপাশি আমাদের তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। নতুবা পরবর্তীতে আমাদের দেশে অসুস্থতা হার বেড়ে যাওয়ার ফলে দেশের উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে। চলুন জেনে নিই তথ্য ও প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি এবং তা থেকে কিভাবে নিজেকে বিরত রাখবেনঃ-
- তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা আমাদের অনেক পার্সোনাল তথ্য অনেক জায়গায় দিয়ে দিচ্ছি। ফলে তা হ্যাকার কবলে পড়ার আশংকা বাড়ছে। সুতরাং তথ্য প্রদানে সাবধান হতে হবে।
- তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষ অতিরিক্ত সময় ব্যায় করার ফলে তারা অলস হয়ে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে! সুতরাং লিমিটের ভেতর এই প্রযুক্তি ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কারণ ছাড়া অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে দিনের অনেক সময় লস হচ্ছে। এক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে না।
আশা করি আমাদের আজকের এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি রিলেটেড আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে। পরবর্তী আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত চোখ রাখুন। ধন্যবাদ সবাইকে!