You are here
Home > অনলাইন ইনকাম > শেয়ার কেনার সময় যেসব ভুল করা যাবেনা

শেয়ার কেনার সময় যেসব ভুল করা যাবেনা

শেয়ার

 

শেয়ার কেনার সময় অনেকেই অনেক ভুল করে থাকেন। সে-সব ভুলের কারণে একজন নিউবি শেয়ার ইনভেস্টর নানাভাবে লসের মুখে পড়ে। ফলে শেয়ার বাজার সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো হয় না। এক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সময় যেসব ভুল করলে লস হওয়ার আশংকা বেশি সে-সব ভুল সম্পর্কে যদি আমরা আগে থেকেই জেনে রাখি তাহলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কম থাকে। চলুন সে-সব ভুল সম্পর্কে জেনে নিই শেয়ার কেনার সময় যেসব ভুল একেবারেই করা যাবে না।

শেয়ার বাজার এর বর্তমান অবস্থা এবং যেভাবে বিনিয়োগ করবেন

 

শেয়ার কেনার সঠিক সময় মেনে চলা

শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করার আগে বা শরয়ার কেনার আগে শেয়ার কেনার সঠিক সময় মেনে চলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে খেয়াল রাখতে হবে। যদিও স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ শুরু করার কোন আদর্শ সময় নেই। তবে সঠিক সময় বলেও একটি ব্যাপার আছে আর আপনাকে এই সঠিক সময়টিকে নিয়েই গবেষণা করে তবে শেয়ার কেনার বা বিক্রি করার চিন্তা করতে হবে।



যারা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করতে চান তারা যে কোনো সময় শেয়ার কিনে নিতে পারেন। পরে যখন ২০ বছর পর আপনার টাকা ৫ গুন বৃদ্ধি পাবে তখন সুযোগ বুঝে সেল করলেই লস হওয়ার আশংকা থাকবে না। বরং শেয়ার বাজারে আপনি নিজেকে সফল হিসেবে আবিষ্কার করতে সক্ষম হবেন। আজ পর্যন্ত যারা শেয়ার বাজারে সফলতা লাভ করতে পেরেছে তারা কেউই বাজারের সময় দেখে বিনিয়োগ করেনি বা শেয়ার মার্কেটে কারসাজি সম্পর্কে অতটা ভাবেনি। তবে আপনি যদি প্রতি মাসে বা সপ্তাহে, সময় এর সাথে সাথে আপনার মূলধন বাড়াতে চান তাহলে ধারাবাহিকভাবে ইনভেস্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে শেয়ার কেনার সঠিক সময় মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

ডিএসই মার্কেট প্রাইস খেয়াল রাখতে হবে (Dhaka Stock Exchange)

আপনি কি জানেন শেয়ার বাজারে লস খেতে না চাইলে ডিএসই মার্কেট প্রাইস খেয়াল রাখতে হবে? কেননা ডিএসই মার্কেট প্রাইস সবসময় এক থাকে না। বরং ওঠানামা করে। মিনিমাম 5 লাখ টাকার ট্রেড করতে না পারলে আপনি কোনোভাবেই ডিএসই মার্কেটে শেয়ার করতে পারবেন না। বিগ ইনভেস্টর দের ট্রেড করার সুযোগ করে দেওয়া এই মার্কেট শতভাগ বিশ্বস্ত। তবে এই মার্কেটে বিগ ভলিউম কালেকশন করা সহজ হলেও বিগ গেম করে সফল হওয়া খুব একটা সহজ নয়। ছোট ট্রেড হওয়ার সুযোগ কম থাকায় মূলত এমন পরিস্থিতি!

পাশাপাশি শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করতে হলে আপনাকে শেয়ার বাজারের ইনডেক্স পর্যালোচনা করতে হবে। কেননা এতে মার্কেট এর সার্বিক অবস্থা বোঝা যায়। বোঝা যায় মার্কেট পূর্বের চেয়ে কি ভালো অবস্থানে আছে নাকি খারাপ অবস্থানে আছে। বর্তমানে 307 টি কোম্পানি নিয়ে এই ডিএসই মার্কেট গঠিত। সফল হতে গেলে এতো বড় মার্কেট আপনার লাগবেই। সুতরাং শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করার আগে অবশ্যই ডিএসই মার্কেট প্রাইস আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।

 

অতিরিক্ত দামে শেয়ার না কেনা

ক্রেতা হিসেবে ১০০ টাকা নিয়ে ঘর থেকে কিছু কিনবেন বলে বের হওয়ার পর তা ভোগ্যপণ্য কেনা হিসেবেই আপনাকে ধরে নিতে হবে। অর্থ্যাৎ বাজার থেকে কোনো ভোগ্যপণ্য কিনলে তা সাধারণত না থেকে ভোগের পর্যায়ে চলে যায়। কিন্তু শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রে বছরের পর বছর আপনার লভ্যাংশ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। লাভের মুখের লোভে অনেকেই অতিরিক্ত দামে শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। যা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।



যারা প্রথমবারের মতো শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করার কথা চিন্তা করছেন তারা অবশ্যই প্রথমদিকে একদমই অতিরিক্ত দামে শেয়ার কেনার কথা চিন্তা করবেন না। কোম্পানির ভালো-মন্দ জানার বা বোঝার যে দক্ষতা রয়েছে তা যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আয়ত্ত করতে পারছেন না ততক্ষণ পর্যন্ত শেয়ার বাজার আপনার জন্য নিরাপদ নয়। সুতরাং নিজের মূল্যবান অর্থকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিবেন না। মনে রাখবেন দামে সস্তা কোম্পানি মানেই যে অনিরাপত্তার ইঙ্গিত এবং দামে বেশি কোম্পানি মানেই যে নিরাপত্তার ইঙ্গিত তা কিন্তু নয়। সুতরাং সচেতনতাকে পুঁজি করা ছাড়া হুটহাট অতিরিক্ত দামে শেয়ার না কেনার দিকে মনোযোগী হোন।

 

অতি উৎসাহিত হয়ে শেয়ার না কেনা

অনেকেই অতি উৎসাহিত হয়ে শেয়ার কেনার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। এমনটা কখনোই করা যাবে না। শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করার মতো ব্যাপারগুলিতে দরকার ধীরেসুস্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা। এখানে হুটহাট সিদ্ধান্ত লস তৈরি করতে দেরি করে না। কোম্পানিটির মূলভিত্তি কেমন অথবা কোম্পানিটি কোন ক্যাটারগরিতে অবস্থান করছে তা নিয়ে আগে খানিকটা রিসার্চ করুন এবং সময় নিন। কেননা পরবর্তীতে রিসার্চ করা ছাড়া অতি উৎসাহিত হয়ে শেয়ার কেনার ব্যাপারটি আপনাকে অনেেকটা ভোগাবে।

এক্ষেত্রে আপনি শেয়ার বাজারের বিভিন্ন খবরাখবর, প্ল্যানিং, কোম্পানির অবস্থা সবকিছু নিয়ে রিসার্চ করার দিকে মনোযোগী হতে পারেন। আবেগ দিয়ে শেয়ার বাজার কখনোই চলে না। এখানে বাস্তবতার পরিমাণটা বেশি। এখানে যেমন লাভ আছে তেমনই লসও আছে। কেবল লাভের মুখ দেখার লোভে অতি উৎসাহিত হয়ে শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নিলে আমি বলবো আপনি ভুল করবেন। আর এটি যদি এক-দুই টাকার ব্যাপার না সেহেতু কিছু ব্যাংক-ব্যালেন্স করে তবেই শেয়ার বাজার কেনা কিংবা এখানে ইনভেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিবেন।

 

সব পুঁজি দিয়ে শেয়ার না কেনা

অনেকেই অতি লাভের লোভে সব পুঁজি একসাথে শেয়ার করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়। যা একেবারেই ভুল। সব পুঁজি দিয়ে শেয়ার না কেনার মতো সিদ্ধান্ত যদি আপনি শেয়ার বাজারের ব্যাপারে নিতে না পারেন তাহলে নির্ঘাত আপনি বড়সড় বিপদের মুখে পড়বেন।

কেননা শেয়ার বাজারে লস হবে না কিংবা কেবল লাভই হবে এমন নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারে না। এক্ষেত্রে আপনি যদি একসাথে নিজের জমানো সমস্ত টাকা এখানে ঢেলে দেন কিংবা শেয়ার করে ফেলেন তাহলে লসে পড়লে পথ খুঁজে পাবেন না। অনেককেই দেখা যাবে রাস্তায় নেমে যেতে। সুতরাং কোনোভাবেই সব পুঁজি দিয়ে শেয়ার কিনে ফেলা যাবে না।

 

ক্যাটাগরি দেখে শেয়ার কিনতে হবে

বিভিন্ন শেয়ার এর ক্যাটাগরি সম্পর্কে জেনে শেয়ার বাজারে ইনভেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো যে সকল কোম্পানি নিয়মিত AGM(Annual General Meeting) সম্পন্ন করেছে তারা এ ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত। আবার যে সকল কোম্পানি নিয়মিত AGM(Annual General Meeting) সম্পন্ন করছে তারা বি ক্যাটাগরির সেক্টর।



এন ক্যাটাগরি হলো নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি। তারা ক্যাটাগরির শর্ত পূরণ করে A/B ক্যাটাগরিতে তখনই যাবে যখন কোম্পানিগুলোর প্রথম AGM হয় যাবে। সবশেষে জেড ক্যাটাগরি হলো ৬ মাস বা তার বেশি সময় ধরে ব্যবসায়ে অপারেশন বন্ধ থাকা কোম্পানিগুলি। সবশেষে  G ক্যাটাগরির শেয়ার গ্রীন ফিল্ড কোম্পানিগুলির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেহেতু ক্যাটাগরি দেখে শেয়ার কিনতে হবে সেহেতু এসব ক্যাটাগরির শর্ত মেনে চলা আবশ্যক।

 

ভালো শেয়ার সেল করে অন্যান্য শেয়ার কেনা

শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (NAV) এর সাথে বাজারমূল্যের একটা সামঞ্জস্য থাকলে ভালো শেয়ার সেল করে অন্যান্য শেয়ার কেনা যায়। এই টেকনিকে বেশ ভালোই আর্নও করা যায়। তবে এক্ষেত্রে ভালো শেয়ার সেল করতে হবে। সেই সেলিং প্রাইজ দিয়ে ব্যাংক ঋণ এবং অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করার পর দেখা যাবে বেশ ভালোই অর্থ নিজের কাছে রয়েছে।

শেয়ার বাজার নিয়ে কন্টিনিউ কাজ করতে চাইলে সেই লাভের পরিমাণ দিয়ে অন্যান্য শেয়ার কিনেও টাকা দিয়ে টাকা তৈরি করা যায়। শুধু শুধু সেই লাভের পরিমাণ ফেলে না রেখে কিংবা অযথা খরচ না করে নতুন এবং লাভজনক শেয়ার কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। আবার চাহিদা-যোগানের সূত্র অনুসারে শেয়ার সংখ্যা কম হলে তো কথাই নেই। ভালো দামে বিক্রির সুযোগ থাকে এতে। 

 

ইতি কথা

শেয়ার বাজারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে আজ আলোচনা করলাম। আশা করি এই পয়েন্টগুলি মাথায় আঠার মতো লাগিয়ে রাখলে শেয়ার বাজারে সেক্টরে সফল হওয়া খুব একটা কঠিন মনে হবে না। বিশ্বের বাজারের অভিজ্ঞতার আলোকে শেয়ার ব্যবসায় আগ্রহীদের জন্য উপরের পয়েন্টগুলি অতিব জরুরি। এতে করে লসের মুখ থেকে ফিরে আসবে আপনার শেয়ার বাজার সম্পর্কিত প্ল্যানিংটি৷

Facebook Comments
Top