You are here
Home > অনলাইন ইনকাম > দারাজ অনলাইন শপিং থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায়

দারাজ অনলাইন শপিং থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায়

দারাজ অনলাইন শপিং

 

অনলাইন এ টাকা ইনকাম করার কথা ভাবলেই প্রথমে মাথায় আসে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলো থেকে আয়। দারাজ অনলাইন শপিং থেকেও যে ইনকাম করা যায় সেটি প্রথমেই কেউ চিন্তাও করেনা। অথছ দারাজ অনলাইন শপিং মল এর নাম শোনে নাই এমন লোক বাংলাদেশ খুজেঁ পাওয়া কঠিন। সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস গুলো হলো ফাইভার, আপওয়ার্ক, বিহ্যান্স ইত্যাদি। তবে ইয়াং জেনারেশন যে হারে অনলাইন ইনকাম এর দিকে ঝুঁকছে তাতে সফলভাবে অনলাইন থেকে ইনকাম করাও যেন চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বৃহৎ মার্কেট প্লেস এ ফ্রেশার ফ্রিল্যান্সাররা অ্যাকাউন্ট খুললে ও ঠিক মতো কাজ না পাওয়ায় হতাশ হচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা নিরাশ হয়ে কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। কিন্তু তারা হয়তো জানে না দারাজ এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে সহজেই টাকা ইনকাম করা যায়। অনেকেই দেখা যায় স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের খরচ নিজে চালাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাদের জন্য দারাজ এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অথবা সেলার হিসাবে কাজ করা টা খুব সহজ।

তাই পড়াশোনার পাশাপাশি একজন স্টুডেন্ট দারাজ অনলাইন শপিং থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে পারে। আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আজকের ব্লগ টি কিসের উপর। হ্যাঁ আজকের ব্লগ টি থাকছে দারাজ অনলাইন শপিং থেকে আপনি কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় তার উপর। তাহলে চলুন দারাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যাক এবং ব্লগ টি মন দিয়ে পড়লে দারাজ কি, দারাজ থেকে কিভাবে আপনি আয় করতে পারবেন তার পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন পেয়ে যাবেন।

ঘরে বসে ফ্লিপকার্ট থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়? জানতে পড়ুনঃ

 

দারাজ ডট কম কি?

দারাজ অনলাইন শপিং এর কথা শোনেনি এমন লোক বাংলাদেশ এ পাওয়া দুষ্কর। অনলাইন শপিং বাংলাদেশ লিখে সার্চ করলে সবার প্রথমে আসবে দারাজ। করোনার সময় অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলো যেন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। জরীপ মতে, বাংলাদেশের ভেতর ১ নাম্বার স্থান দখল করে আছে দারাজ ই-কমার্স বিজনেস টি। কিন্তু এর খুটিনাটি বিষয় ক’জন-ই বা জানে। দারাজ অনলাইন মার্কেটপ্লেস টি চিনার মালিকানাধীন যা বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে সফলতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১২ সালে জার্মান কোম্পানি রকেট ইন্টারনেট এর মালিকানায়। ২০১২ সালেই দারাজের একটি শাখা প্রতিষ্ঠিত হয় পাকিস্তান এ। এটি বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারে কার্যক্রম শুরু করে ২০১৫ সালে। মাত্র কয়েক বছরেই এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে টপ ই-কমার্স বিজনেস এ র‍্যাংক ও করেছে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি দারাজ ডট কম কে চীনা কোম্পানি আলিবাবা কিনে নেয়।



দারাজে প্রায় ২০ টির ও বেশি ক্যাটাগরিতে ১০ মিলিয়ন পণ্য বিক্রয় করা হয়। মানুষ এখানে যা কিনতে চাইবে তার সবকিছুই পেয়ে যাবে। একটা ফ্যামিলির সমস্ত পণ্য এখান থেকে কেনা সম্ভব। পরিবারের সবার ড্রেস থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক ডিভাইস, হোম এ্যাপ্লায়েন্স, বিউটি প্রোডাক্ট, গ্রোসারি আইটেম সব কিছুই দারাজে পাওয়া যায়। দেশে মহামারীর সময় যেহেতু বিয়ের ধুম পরে গেছে সেহেতু কেও যদি বাইরে গিয়ে শপিং মল থেকে বিয়ের কেনা কাটা করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ না করে তাহলে বরের কেনা কাটা এমনকি বউয়ের সুন্দর সুন্দর শাড়ি, লেহেঙ্গা দারাজ থেকেই অর্ডার করতে পারবে। যেহেতু দারাজ নামকরা অনলাইন বিজনেস, তাই এখানে ঠকয়ার ভয় নেই। একজন ক্রেতা নিশ্চিন্তে যেকোনো কিছু অর্ডার করতে পারে। মানুষ কি ধরনের অর্ডার বেশি করতে পারে সে-ই কথা মাথায় রেখে দারাজের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে আপনাকে পণ্য সিলেক্ট করতে হবে। 

তাহলে বুঝতেই পারছেন দারাজ এর পরিধি কত বিশাল। আপনি চাইলে এই ই-কমার্স অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এ অ্যাফিলিয়েশন করে আয় করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি দারাজ থেকে আয় করতে পারবেন।

দারাজ থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়?

দারাজ এফিলিয়েট মার্কেটিং

দারাজ অনলাইন শপিং এ রয়েছে অ্যাফিলিয়েশন প্রোগ্রাম, আপনি এর সদস্য হয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েশন প্রোগ্রাম এর সদস্য হওয়ার মাধ্যমে আপনি একটি পণ্য বিক্রয় করলে দারাজ আপনাকে ৯% কমিশন দিবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং জিনিস টা কি আপনি বুঝতে পারছেন না? আপনাকে A-Z  বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এক ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং। এই ডিজিটাল মার্কেটিং যদি আপনি আপনার নিজের বিজনেস এর জন্য করে থাকেন তাহলে সেটা হলো ইন্টারনেট মার্কেটিং আর আপনি যদি অন্য কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট প্রোমোট করেন তাহলে সেটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। আপনি যখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কাজ করবেন তখন আপনি হয়ে যাবেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার। নিশ্চয়ই বিষয়টি এখন আপনার কাছে পানির মতো পরিষ্কার। তাহলে আপনার প্রোমোটিং এর মাধ্যমে যদি দারাজের কোন পণ্য বিক্রয় হয় তাহলে দারাজ আপনাকে সেই পণ্যের উপর কমিশন দিবে।

এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কিভাবে দারাজ এর প্রোডাক্টগুলো প্রোমোট করবো? এক্ষেত্রে দরকার আপনার নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ। ওয়েবসাইট যদি আপনার থেকে থাকে তাহলে আপনি দারাজের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সদস্য হয়ে যেতে পারেন। সদস্য হওয়ার পর, আপনার ওয়েবসাইট টি যে রিলেটেড সেই রকম পণ্য আপনি দারাজ থেকে সিলেক্ট করলেন। ধরুন আপনি একজন মেয়ে এবং আপনি দারাজ এর অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে চাচ্ছেন। আপনার একটা রূপচর্চা বিষয়ক ব্লগ সাইট রয়েছে। তাহলে আপনি দারাজ থেকে বিউটি প্রোডাক্ট সিলেক্ট করতে পারেন প্রমোটিং এর জন্য। আবার ধরুন আপনি একজন ছেলে। আপনার ওয়েবসাইট টি টেক রিলেটেড, আপনি দারাজ থেকে টেক রিলেটেড প্রোডাক্ট গুলো সিলেক্ট করবেন। এরকম আপনি আপনার পছন্দের প্রোডাক্ট সিলেক্ট করে সুন্দর করে আর্টিকেল লিখে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইট এ পাবলিশ করবেন।



ধরুন আপনি একটি স্মার্টফোন দারাজ থেকে সিলেক্ট করলেন। তারপর আপনার ওয়েবসাইট এ দারাজের রিভিউ আর্টিকেল লিখবেন। অনেকে কিন্তু কোনো কিছু কেনার আগে গুগল এ সার্চ করেই সাধারণত প্রোডাক্ট কেনে। রিভিউ কন্টেন্ট এ আপনার উল্লেখ্য করলেন ফোনের ফেচারস সম্পর্কে, ফোনটি ব্যবহারের ফলে একজন ক্রেতার কি কি সুবিধা হবে এবং কি কি অসুবিধায় পড়তে পারে এগুলো উল্লেখ করবেন। আপনার রিভিউ এর লাস্টে আপনি দারাজের অ্যাফিলিয়েট লিংক টি এড করে দিন। যাতে ক্রেতা আপনার লিংকে ঢুকে প্রোডাক্ট টি কিনতে পারে। ক্রেতা টি যদি প্রোডাক্ট টা কিনতে আগ্রহী হয়ে থাকে তাহলে সে আপনার লিংক এ প্রবেশ করবেই। এত কষ্ট করে আপনার লাভ কি? আপনার লাভ হলো, ক্রেতা টি যদি আপনার লিংক এ গিয়ে প্রোডাক্ট টি কেনে তাহলে আপনি দারাজ থেকে কমিশন পেয়ে যাবেন। আপনি যে পণ্যই বিক্রয় করুন না কেনো আপনি ৯% কমিশন পাবেন। ধরুন স্মার্টফোন এর দাম ১০,০০০ টাকা। আপনার ওয়েবসাইট থেকে স্মার্ট ফোন টি গ্রাহক কিনে নিলো তাহলে আপনি ১০,০০০ টাকায় কমিশন পাবেন ৯০০ টাকা। ভাবুন, এখানে আপনার কোনো ইনভেস্ট নাই, শুধু মাত্র অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেই ৯০০ টাকা পেয়ে গেলেন।  আরও একটি সুবিধা হলো, আপনার ওয়েবসাইট এ ঢুকে আপনার দেওয়া লিংকে প্রবেশ করে যদি ক্রেতা প্রোডাক্ট টি না কিনে বের হয়ে আসে তাও চিন্তার কিছু নেই। ক্রেতা যদি ৩০ দিনের ভেতর দারাজ থেকে সরাসরি ওই প্রডাক্ট টি কেনে তাহলে ও আপনি দারাজ থেকে ৯% কমিশন পেয়ে যাবেন। আপনার কমিশনের টাকা আপনি বাংলাদেশের যে কোন বৈধ ব্যাংক এ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে পারবেন। আপনার অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখা দিলে দারাজের দক্ষ সাপোর্ট টিম আপনাকে সাহায্য করবে। এছাড়াও তাদের প্রোডাক্ট এর বিভিন্ন বিজ্ঞাপন আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইট এ এড করে দিতে পারেন। যার মাধ্যমে ক্রেতার সংখ্যা বাড়ানো যায়।

অনলাইনে সহজে আয় করা যায় কোন কাজের গুলোর মাধ্যমে?



 

দারাজ সেলার অ্যাকাউন্ট অথবা ভেন্ডরশিপ এর মাধ্যমে টাকা ইনকামঃ

আপনার যদি শখের “ফ্যাশন বুটিক হাউজ ” থাকে আর সেটা যদি গ্রামে হয় তাহলে সেখানে ভালো সেল হওয়ার কথা না কারণ গ্রামের মানুষ এখনো অতটা শৌখিন হয়ে ওঠেনি। এক্ষেত্রে বেস্ট সেল টা পেতে আপনি দারাজে সেলার অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে পারেন। এখানে আপনার হয়ে দারাজ আপনার প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করবে, এর ফলে দারাজ প্রতিটি পণ্যের উপর ফিক্সড কিছু কমিশন নিবে। আবার ধরুন আপনার একটি উড ম্যাটারিয়ালস এর কারখানা আছে। লোক দিয়ে আপনি ফার্নিচার বানিয়ে নিচ্ছেন ঠিকই কিন্তু আপনার চাকরির পাশাপাশি হয়তো দোকানে বসার টাইম পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে আপনি দারাজে সেলার/ ভেন্ডর অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে পারেন।  এতে আপনার টাইম বের করে আর দোকানে বসতে হবে না। দারাজ আপনার প্রোডাক্ট এর মার্কেটিং করবে। এক্ষেত্রে আপনার প্রোডাক্ট গুলো তাদের ওয়েবসাইট এ শো করবে। সেল হয়ে গেলে আপনি কুরিয়ার করে গ্রাহকের নিকট পৌঁছে দিবেন। এতে আপনার সেল আগের তুলনায় অনেক বাড়বে এবং আপনার সময় লাঘব হবে। ফার্নিচার এর ক্ষেত্রে দারাজ  ৯.৫২% কমিশন নিয়ে থাকে। এভাবে ও আপনি দারাজ থেকে টাকা ইনকাম করতে পারেন।

আপনি নিশ্চয়ই ব্লগ টি পরে দারাজ অনলাইন শপিং থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায় সেই সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। দারাজ থেকে টাকা ইনকাম করতে চাইলে আজই দারাজের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের সদস্য হয়ে যান। অথবা আপনি যদি কোন উদ্যোক্তা হয়ে থাকেন এবং নিজের কোন প্রোডাক্ট থাকে তাহলে দারাজ ভেন্ডর অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের প্রোডাক্ট দারাজের মাধ্যমে সেল করতে পারেন।

Facebook Comments
Top