You are here
Home > চাকরির খোঁজ > জেনে নিন পাসপোর্ট করার নিয়ম এর সবকিছু

জেনে নিন পাসপোর্ট করার নিয়ম এর সবকিছু

পাসপোর্ট করার নিয়ম

 

কোনো দেশে যদি আপনি প্রবেশ করেন, তবে তা অনুপ্রবেশ হিসেবেই গণ্য করা হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার কোনো পাসপোর্ট থাকছে। কিন্তু আজকাল এই পাসপোর্ট করার ব্যপারটিকেও বেশ জটিল করে ফেলেছে কিছু দালালচক্র। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে নানান জটিলতার। বৈধ ভাবে যেকোনো দেশে যেতে চাইলে প্রথমে অফিসিয়াল ভাবেই আপনার পাসপোর্টের খোঁজ করা হবে। সুতরাং এক্ষেত্রে জটিলতার কারণর পাসপোর্ট তৈরি করতে পারেননি এমন এক্সকিউজ কোনো কাজেই আসবে। এক্ষেত্রে কি করা উচিত? পাসপোর্ট তৈরির আশা ছেড়ে দেওয়া উচিত? একেবারেই না! মনযোগ দিয়ে আমাদের পুরো আর্টিকেলটির সাথে থাকুন। পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কিত সকল বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা সৃষ্টি করে দিবো আমরা।

অনলাইনে চাকরি খোঁজার সেরা ওয়েবসাইট গুলো কি জানতে ভিজিট করুনঃ

 

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

পাসপোর্ট করতে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যোগাড়ের পাশাপাশি কিছু স্টেপ ফলো করতে হবে। এক পলকে দেখে নিন পাসপোর্ট করতে কি কি লাগেঃ-

    1. ফি প্রদান করন
    2. প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্টস
    3. আবেদন ফর্ম কালেক্ট করা
    4. ফর্ম পূরণ করা
    5. অফিসের খোঁজ করা
    6. অফিসে জমা দেওয়া
    7. টোকেন কালেক্ট করা
    8. পুলিশ ভেরিফিকেশন করা
    9. পাসপোর্ট সংগ্রহ করে ফেলা

 

পাসপোর্ট করার নিয়ম

পাসপোর্ট মূলত আকারে ছোট একটি বই যাতে আপনার ও আপনার নিজের দেশ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাবলি দেওয়া থাকে। পাশাপাশি থাকে বিদেশ ভ্রমনের অনুমতিসহ অন্যান্য তথ্য। ঠিক তেমনই বাংলাদেশীদের জন্য বিদেশ ভ্রমনের একটি অফিসিয়াল দলিল হলো এই পাসপোর্ট। যা বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের দিয়ে থাকেন। এখন চলুন পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই!

পাসপোর্ট করতে হলে আপনাকে অফিসিয়াল কিছু নিয়মাবলী মেনে তবে পাসপোর্ট তৈরির জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মগুলি হলোঃ-

 

পাসপোর্ট এর ফি প্রদান

পাসপোর্ট তৈরিতে পাসপোর্ট অফিস একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি চার্জ করে থাকে। যা পরিশোধ করার মাধ্যমে পাসপোর্টের কাজ শুরু হয়। আপানি চাইলে এই পাসপোর্ট ফি অনলাইন-অফলাইন দুইভাবেই পরিশোধ করতে পারেন। যারা অফলাইনে এই চার্জ পরিশোধ করতে চান তারা সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করে তা পরিশোধ করতে পারেন। আর যা ঝটকি-ঝামেলা ছাড়া অনলাইন ফি দিতে চান তারা ব্যাংকিং সুবিধা নিতে পারেন। 

অনলাইনে আবেদন করলে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শেষেই আপনি ফি পরিশোধ করার অপশন পাবেন। ওখান থেকেই পে করে দিবেন। আর অফলাইনে যেহেতু সরাসরি অফিসে যেতে হবে সেহেতু অফিস কতৃপক্ষের হাতে ফি বুঝিয়ে দিলেই যথেষ্ট। যারা দ্রুত পাসপোর্ট করিয়ে নিতে চান তাদের একটু বেশি পরিমাণেই পে করতে হবে। কেননা কত দিনের ভিতর আপনি পাসপোর্ট পেতে চান তার উপর নির্ভর করবে আপনার এই পাসপোর্ট ফি। এক্ষেত্রে ২১ বা এর থেকে বেশি সময় এবং ২-৭ দিনের যেকোনো একটি অপশন পছন্দ করে নিতে পারেন। 

 

ফর্ম পূরণ

এই ধাপে এসে আপনাকে বাংলাদেশ পাসপোর্ট ফর্ম পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে একাধিক কপি রাখতে পারেন। যাতে ভুল বা কাটাকাটি না হয়। যেহেতু অফলাইন ও অনলাইন দুই ভাবে পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করা যায় সেহেতু আপনি আপনার পছন্দমতো মাধ্যম ব্যবহার করে ফর্মটি পূরণ করে নিতে পারেন। আপনি যদি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্টের ফর্ম পূরণ করতে চান তবে আপনাকে পাসপোর্ট অফিস কতৃপক্ষ তা বিনামূল্যেই বিতরণ করবে। এতে আপনাকে কোনো পে করতে হবে না।

আর যারা অফলাইনে এবং ঘরে বসেই এই পাসপোর্ট ফর্ম পূরন করতে চান তারা পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ফর্মটি ডাউনলোড করে নিন। সবশষে pdf ফরমেটে download করে কয়েকটি print করে পূরণ করে নিন।

অনলাইনের ক্ষেত্রে তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে সবকিছু ঠিকমতো পড়ে নিয়ে “I have read the above information & the relevant guidance notes” অপশনটিতে এবং পরবর্তীতে Continue to online enrollment বাটনেটিতেও ক্লিক করুন৷ এবার আপনাকে আপনাকে ফর্ম পূরনের পেইজে নিয়ে গেলে ব্যাক্তিগত সব তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করে নিন।

 

সত্যায়িত করা

সত্যায়িতফর্ম পূরণ হয়ে গেলে যেখানে ছবি লাগানোর নির্দেশ রয়েছে সেখানে ছবি এড করে নিন। সেই সাথে ফর্মের ডান পাশে ব্যাংকে টাকা জমার রশিদটিও আঠার সাহায্যে লাগিয়ে নিতে হবে। অতঃপর পাসপোর্ট ফর্মটিকে সত্যায়িত করার পালা। কেননা যেকোনো পাসপোর্ট তৈরিতে সত্যায়ন ও একটি প্রত্যায়ন পত্রের দরকার পড়ে। পাসপোর্টের একটি অংশে প্রত্যায়নকারী তাঁর নিজের তথ্য ব্যবহার করে প্রত্যায়ন করার নির্দেশ রয়েছে।

এক্ষেত্রে আপনাকে যেকোন সরকারী প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার সাহায্য নিতে হবে। তবে এমন কোনো কর্মকর্তাকে নির্বাচন করবেন যিনি আপনাকে ভালোভাবেই চেনেন। সেই কর্মকর্তা আপনার পরিচয় পত্রের ফটোকপিটিকেও সত্যায়িত করে দিলে তিনি মোবাইল, নম্বর এবং অফিশিয়াল সিল প্রদান করে দিবেন। এই কাজটি করতে হবে পাসপোর্ট ফর্মের প্রত্যায়ন অংশে। যাদের পরিচিতি কোনো সরকারি কর্মকর্তা নেই তারা কাজটি যেকোন নোটারি থেকেও সেরে নিতে পারেন। বাংলাদেশে সাধারণত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও সরকারি কোর্টগুলো যেহেতু কাছাকাছি থাকে সেহেতু আশপাশেই খুজলে নোটারি পেয়ে যাবেন। তাকে দিয়েই আপনি সত্যায়ন ও প্রত্যায়নের কাজটি সেরে নিতে পারবেন।

 

আবেদন জমা দেওয়া

এবার আপনাকে আপনার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার পূরণকৃত ফর্মটি জমা দিতে হবে। তবে হ্যাঁ, ফর্ম সাবমিট করার পূর্ব পর্যন্ত আপনাকে অযথা পাসপোর্ট অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতেই হবে না। যেহেতু বর্তমানে পাসপোর্ট অফিসের অনেকগুলোরই স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে সেহেতু যাবার আগে অবশ্যই অফিসের ঠিকানা জেনে নিবেন। নতুবা ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতেই হাপিয়ে উঠবেন। সাবমিট করার আগে ফর্মটিতে অবশ্যই আরেকবার ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নিবেন৷ ফর্মটি একটি নির্দিষ্ট কক্ষে নেওয়ার ফলে আপনাকে লম্বা সিরিয়াল ধরতে হতে পারে। সুতরাং হাতে সময় নিয়ে বেরুবেন।

 

ভেরিফিকেশন অব পুলিশ

এবার পুলিশ ভেরিফিকেশনের পালা। আবেদন পত্র জমা দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই আপনাকেই পুলিশ ভ্যারিফিকেশনের জন্য ডাকা হবে। এক্ষেত্রে অনেকসময় কতৃপক্ষ আবেদনকারীর বাড়িতে আসতেও পারে। তবে সবক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য নয়। জায়গা/জমির কাগজ, ইউটিলিটি বিলের কপি ইত্যাদি চেয়ে এরই ভেরিফিকেশনের কাজটি করা হয়।

 

পাসপোর্ট হয়েছে কিনা কিভাবে জানবো?

এক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে মাঝে মাঝে ঢুকে আপনার পাসপোর্ট এসেছে কিনা তা চেক করে নিতে হবে। পাসপোর্ট তৈরির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এনরোলমেন্ট আইডি দেখিয়ে আপনি আপনার পাসপোর্ট এর স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন। পাশাপাশি ব্যাপারটি এসএমএস করেও জেনে নিতে পারবেন।

 

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম

ই পাসপোর্ট করতে চাইলে গুগলে গিয়ে সার্চ  www.epassport.gov.bd সার্চ করুন। ওয়েবসাইটটিতে লগ ইন করে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন (Directly to online application) অপশনে ক্লিক করুন৷ প্রথম ধাপে বর্তমান ঠিকানা, দ্বিতীয় ধাপে ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ই-পাসপোর্টের মূল ফরমটি পূরণ করে তা সাবমিট করা, তৃতীয় ধাপে মেয়াদ ও পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দেওয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারলেই আপনার ই পাসপোর্ট তৈরির কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়ে যাবে।

তবে যে ব্যাংকে আবেদন করতে চান সেই ব্যাংকের টাকা পরিশোধের জমা স্লিপের নম্বর এখানে দিতে হবে। আর যারা অনলাইনে পেমেন্ট করতে চান তারা ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কোনো ঝামেলা ছাড়াই অনলাইনে পেমেন্ট করতে পারবেন। এর পরের স্টেপ হলো জাতীয় পরিচয়পত্রসহ (এনআইডি) প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করে ফেলা। এক্ষেত্রে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে সারসরি যেতে হবে। আপনার কাজ এতটুকুতেই শেষ। এবার আপনার অপেক্ষা করার পালা।

 

ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম

ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইটে লগইন করে আপনার পাসপোর্ট আবেদন কি পর্যায়ে আছে তা জানতে পারবেন৷ এক্ষেত্রে অ্যাপ্লিকেশন স্ট্যাটাস (check application status) ক্লিক করলেই হবে। আপনাকে পাসপোর্ট আবেদনের সময় একটি স্লিপের অ্যাপ্লিকেশন আইডি দেওয়া হবে। সেটি কিংবা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করার আইডি নম্বরটি দিয়ে আপনি খুব সহজেই ই পাসপোর্ট চেক করে নিতে পারেন।

ই-পাসপোর্ট কি? ই পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি? কি?

 

উপসংহার

পাসপোর্ট আমাদের সকলেরই জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্টস। বিশেষ করে পুরো বিশ্বকে দেখার জন্যে হলেও পাসপোর্ট দরকার। আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার উপকারে আসবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Facebook Comments
Top