You are here
Home > ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার > নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি বা কাজ পাওয়ার উপায়

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি বা কাজ পাওয়ার উপায়

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি কেমন, আপওয়ার্ক কাজের প্রকারভেদ কি কি এবং আপওয়ার্ক চাকরি পাওয়ার উপায় কি! যে বা যারা আউটসোর্সিং কাজের সঙ্গে নিযুক্ত রয়েছেন অথবা খুব সম্প্রতি অনলাইন ইনকামের জন্য মার্কেটপ্লেসে নেমেছেন, তারা মূলত এই প্রশ্নগুলো করে থাকেন। 

কেননা এটা আমরা সকলেই কমবেশি জানি যে– বর্তমানে যেকোনো প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন, জানা-অজানা যেকোনো বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করে গুগল । কারণ গুগল এমনই একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে সকল প্রকার প্রশ্নের সঠিক উত্তর খুঁজে পাওয়া সম্ভব এক নিমিষে। 

ঠিক এ কারণেই আজ আমরা আজকের এই পোস্টে আপনাদেরকে জানাতে চলেছি– নতুনদের জন্য আপ ওয়ার্ক চাকরির ধরন, আপ ওয়ার্ক চাকরির উপায় এবং বেতন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি। 

আপওয়ার্ক কি?

Upwork হলো ফ্রিল্যান্স চাকরি পাওয়ার একটি জনপ্রিয় ওয়েব পোর্টাল। বলা যায় বর্তমানে পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বড় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে যে সকল ওয়েব পোর্টাল গুলো অবস্থান করছে তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে আপওয়ার্ক। 

তবে হ্যাঁ, বর্তমানে ফ্রিল্যান্স চাকরি পাওয়ার এই জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসটি শুরুর দিকে ওডেক্স নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তার নাম পরিবর্তন করা হয় এবং ইল্যান্স নামক একটি মার্কেটপ্লেস এর সাথে একীভূত করে এর নাম দেওয়া হয় upwork। 

আপওয়ার্ক প্রোফাইল কি?

ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি– আপ ওয়ার্ক হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। যেখানে পেশাদার ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজ করে থাকে। মূলত এই সকল মার্কেটপ্লেসের সাহায্যে বায়াররা দক্ষ ও যথোপযুক্ত ফ্রিল্যান্সার অথবা সার্ভিসারদের হায়ার করে থাকে। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সার, অ্যাপ, ওয়েব ডেভেলপার, ডিজিটাল মার্কেটিং সার্ভিসারসহ বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা ক্লায়েন্ট সরবরাহ করার মাধ্যমে প্রজেক্ট বেইজে কাজ করে থাকে। 

আর এই ধরনের মার্কেটপ্লেসে যদি কেউ অ্যাক্টিভ থাকতে চায় তাহলে একটি প্রোফাইল ক্রিয়েট করার প্রয়োজন পড়ে। অতএব বলা যায় upwork profile হচ্ছে ওই প্রোফাইল, যেটা আপওয়ার্ক নামক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ক্রিয়েট করা হয়ে থাকে। 

যেমন ধরুন, আপনার নাম শিহাব। আপনি পেশায় একজন ওয়েব ডেভলপার। আপনি মূলত ওয়েব ডেভেলপ সংক্রান্ত সকল প্রকার সার্ভিস প্রদান করে থাকেন। এক্ষেত্রে এই কাজের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে এবং আপনি কতটা দক্ষ + এই কাজে কতটা অভিজ্ঞ ইত্যাদি এইসকল বিষয় অডিয়েন্সদের সামনে তুলে ধরার জন্য অথবা ক্লায়েন্টদের সামনে পৌঁছানোর জন্য যে প্রোফাইলটি আপ ওয়ার্ক ওয়েব সাইটে ক্রিয়েট করবেন, সেটাই হচ্ছে আপওয়ার্ক প্রোফাইল বা আপ ওয়ার্ক আইডি। 

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি কি, নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি কেমন, নতুনদের জন্য আপ ওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসটি কতটা উপযোগী–  এই বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য অনেকের মনে ই প্রশ্ন আসে। মূলত আপনি যদি নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি কেমন এবং কি কি চাকরি রয়েছে এসব জানতে চান তাহলে, ধারাবাহিকভাবে আপনাকে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে হবে। 

যেমন ধরুন– upwork কাজের প্রকারভেদ, upwork চাকরির ধরন অর্থাৎ আপওয়ার্কে কি কি কাজ পাওয়া যায় বা কি কি কাজ করা যায় ইত্যাদি ইত্যাদি। ঠিক এ কারণেই আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা তুলে ধরব– আপওআর্ক চাকরির ধরন, নতুনদের জন্য সেরা upwork চাকরি, ফ্রিল্যান্সিংয়ের চাকরির ধরন সম্পর্কে খুঁটিনাটি। 

আপওয়ার্ক চাকরির প্রকারভেদ

আপওয়ার্ক চাকরির প্রকারভেদ নির্দিষ্টকরণ করা সম্ভব নয়। কেননা জনপ্রিয় এই ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে, মূলত সকল ধরনের কাজ করা যায়। অতএব আউটসোর্সিং কাজের অন্তর্ভুক্ত যে সকল কাজ রয়েছে তার সবগুলোই করা সম্ভব আপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্স ওয়েব পোর্টালে। 

তাই আপনি যদি আপ ওয়ার্ক এর কাজের ধরন বা প্রকারভেদ বুঝতে চান তাহলে নিম্ন বর্ণিত ক্যাটাগরি গুলো পড়ুন। কেননা আমাদের উল্লেখিত এই কাজগুলোর যেকোনো একটি কাজকে কেন্দ্র করে আপনি আপওয়ার্কে নিজের একটা প্রোফাইল ক্রিয়েট করতে পারবেন এবং বিভিন্ন প্রজেক্ট বেইজে কাজ করতে পারবেন। 

আর হ্যাঁ, আপনারা যারা অনলাইন কাজ সম্পর্কে একদমই জানেন না তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে— এই আপওয়ার্কসহ প্রায় প্রত্যেকটি ফিন্যান্স মার্কেটপ্লেস গুলোতে দুই ধরনের মানুষ কাজ করে থাকেন। তাদের একজন হচ্ছেন বায়ার অর্থাৎ যিনি কাজ দেন। অন্যদিকে আরেকজন হচ্ছে ফ্রিল্যান্সার, যারা কাজ করে দেন। 

যেমন ধরুন— এই যে আমি এই আর্টিকেলটি উপস্থাপন করছি। এখানে মূলত আমি একজন রাইটার। আর ফ্রিল্যান্সথেরাপি ডট কম ওয়েবসাইটে এই মুহূর্তে একজন রাইটার হিসেবে নিযুক্ত রয়েছি। এখানে মূলত আমাকে কাজটা করতে দেওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে এই ওয়েবসাইটের মালিক তিনি মূলত আমাকে হায়ার করেছেন। এখানে আমি হলাম ফ্রিল্যান্সার (রাইটার), যিনি কাজটি করে দিচ্ছে। অন্যদিকে ফিন্যান্সথেরাপি ডট কম ওয়েবসাইটের মালিক হলেন বায়ার, যিনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করার মাধ্যমে কাজটি আমায় থেকে করে নিচ্ছেন। 

তাহলে আসুন এখন জেনে নেই upwork কাজের ক্যাটাগরি গুলো। যে ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত কাজগুলো আপনি সচরাচর অনলাইন মার্কেটপ্লেসে এসে করতে পারবেন। যথা —

  • অ্যাপ ডেভেলপ
  • ওয়েব ডেভেলপ
  • সফটওয়্যার ডেভেলপ
  • এসইও এক্সপার্ট
  • প্রোগ্রামার
  • ডিজিটাল মার্কেটিং
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
  • প্রোগ্রামিং
  • ফটোগ্রাফি
  • ফটো এডিটিং
  • ভিডিওগ্রাফি
  • ভিডিও এডিটিং
  • ভিডিও প্রোডাকশন
  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
  • আর্টিকেল রাইটিং
  • স্ক্রিপ্ট রাইটিং
  • ইমেইল রাইটিং
  • কপিরাইটিং
  • এডভারটাইজিং
  • ডেটা বিশ্লেষক
  • মোবাইল ডেভেলপার
  • ট্রান্সক্রিবার
  • সম্পাদক
  • এডিটর সহ প্রভৃতি। 

এক কথায়– অনলাইনের মাধ্যমে আর যে সকল ওয়েতে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হয় এবং সার্ভিস প্রদান করা হয়ে থাকে তার সেই সকল কাজই এই আপওয়ার্ক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে করা যেতে পারে। 

কেননা এই ধরনের ওয়েবসাইটে মূলত শুধুমাত্র বায়ার এবং ফ্রিল্যান্সাররা অবস্থান করে। এখানে যখন বায়ারদের যাকে প্রয়োজন পড়ে তারা তাদের ডিমান্ড অনুযায়ী সকল কিছু ফ্রিল্যান্সারদের কাছে উপস্থাপন করে এবং ফ্রিল্যান্সারের যদি পছন্দ হয় তাহলে সেই কাজটি করার জন্য নিশ্চিত করে। মূলত এই প্রসেসেই আপওয়ার্কসহ অনলাইন মার্কেটপ্লেসে সকল প্রকার কাজগুলো করা হয়ে থাকে।

Upwork চাকরির ধরন

আপনাকে এ আপনি মূলত তিন ধরনের চাকরিতে যোগদান করতে পারবেন। সেগুলো হচ্ছে–

  • নির্ধারণযোগ্য রেটের চাকরি (Fixed price)
  • ঘন্টা হিসেবে অর্ধ প্রদান কৃত চাকরি (Hourly Rate)
  • দীর্ঘমেয়াদি চাকরি (Milestone)

মূলত নির্ধারণযোগ্য রেটের চাকরিগুলো করার পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সাররা সঙ্গে সঙ্গে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তাদের একাউন্টে জমা করতে পারে। অন্যদিকে যারা ঘণ্টা হিসেবে কাজ করে তারা চুক্তিরত ঘন্টা কাজ করার পরবর্তীতে পারিশ্রমিক হিসেবে যে অর্থটা প্রাপ্য সেটা অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারে। 

অন্যদিকে মাইলস্টোন জব হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদী চাকরি। যেগুলো নির্দিষ্ট একটি প্রজেক্ট সম্পূর্ণভাবে কমপ্লিট হওয়ার পরবর্তীতে অর্থ প্রদান করা হয়ে থাকে। যেমন ধরুন– একজন রাইটার। সে মূলত একটা আর্টিকেলের জন্য হাজার টাকা নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ওই রাইটারটি একটি আর্টিকেল সাবমিট করার পরবর্তীতে পেমেন্ট লাভ করতে পারবে। 

অন্যদিকে ধরুন একজন এডিটর। যে একটি প্রজেক্টে প্রত্যেকদিন 6 ঘন্টা করে কাজ করছে। এবং ওই প্রজেক্ট শুরু করার আগে চুক্তি হয়েছিল এমন যে 6 ঘন্টা কাজ করার পরবর্তীতেই তাকে পেমেন্ট করে দেয়া হবে। এক্ষেত্রে এটি মূলত আউয়ারলি রেট এই ধরনের চাকরির অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। 

অন্যদিকে ধরুন যারা অ্যাপ ওয়েব ডেভেলপার বা এসইও এক্সপার্ট। তারা মূলত কোন ছোটখাটো প্রজেক্টে যোগদান করেছে এবং তারা নির্দিষ্ট একটি কাজ সম্পাদনের জন্য এক মাস দুই মাস অথবা পাঁচ মাস সময় নিয়েছে। এক্ষেত্রে কখনো কখনো এডভান্স কিছু টাকা পে করা হয় এবং বাকি টাকা ওই প্রজেক্ট সম্পন্ন করার পরবর্তীতে দেওয়া হয়ে থাকে। আর এই ধরনের চাকরি গুলোই মূলত মাইলস্টোন জব অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদী চাকরির অন্তর্ভুক্ত। 

আপওয়ার্ক একাউন্ট খোলার নিয়ম

তো পাঠক বন্ধুরা, ইতোমধ্যে আমরা যে আলোচনাগুলো করেছি আশা করছি নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি সম্পর্কে অনেকটাই ধারণা এসেছে আপনার মনে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে একাউন্ট খুলবেন কিভাবে? 

দেখুন যেহেতু আপনি আপনাকে সুন্দর একটা একাউন্ট খোলার মাধ্যমে অর্থাৎ নিজের একটা প্রোফাইল ক্রিয়েট করার পরবর্তীতে সেখানে কাজ করার সুযোগ পাবেন, তাই অবশ্যই এ ধরনের জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস গুলোতে নিজের প্রোফাইলটা অনেক প্রফেশনাল ভাবে খুলতে হবে। 

ঠিক এ কারণে আলোচনার এ পর্যায়ে আমরা আপওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম এবং কিভাবে আপওয়ার্কে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে যোগদান করবেন সে সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তুলে ধরব। তাই এ সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলে পরবর্তী অংশটুকু মনোযোগ সহকারে পড়ুন। 

১ম ধাপে: একটি নতুন ক্রোম ব্রাউজার ওপেন করুন এবং সার্চ করুন আপওয়ার্ক ডট কম অথবা আপওয়ার্ক লিখে। 

২য় ধাপে : প্রবেশ করুন আপওয়ার্ক ওয়েবসাইটে এবং সাইন আপ পেজ এ ক্লিক করুন।

৩য় ধাপে: প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পূরণ করুন। 

৪র্থ ধাপে: প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করার পরবর্তীতে পুনরায় যাচাই-বাছাই করুন এবং ইমেইল ও ফোন নাম্বার সঠিকভাবে ভেরিফাই করুন।

৫ম ধাপে: সকল তথ্য এবং কার্যাবলী সম্পাদন করার পরবর্তীতে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। 

ব্যাস এই কাজটুকু করার মাধ্যমে আপনি মূলত আপ ওয়ার্ক ফ্রিল্যান্স ওয়েবসাইটের একজন মেম্বার হয়ে যাবেন। এরপর আপনাকে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। মূলত আপনার তৈরি কৃত সাবমিট করা নতুন একাউন্টটি এপ্রুভ হওয়া পর্যন্ত।  যখন আপনার অ্যাকাউন্ট এপ্রুভ হয়ে যাবে অতঃপর আরো কিছু কাজ করতে হবে। সেগুলো হলো—

  • প্রোফাইল বা account এর সেটিং অপশন থেকে নিজের আইডিটি ভেরিফাই করা
  • আপনি মূলত কোন কাজে অভিজ্ঞ এবং কি কে সার্ভিস প্রদান করেন সে সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা
  • ভিউ প্রোফাইল অপশন এ প্রয়োজনীয় সকল ইনফরমেশন নির্দিষ্ট নিয়মে পূরণ করা
  • দক্ষতার যোগ্যতা ইত্যাদি সকল দিক বিবেচনা করে প্রফেশনাল ভাবে প্রোফাইলটি ডিজাইন করা। 

এখানে আপনার প্রোফাইলকে প্রফেশনাল হিসেবে তুলে ধরার জন্য কি কি করতে হবে মূলত এ ব্যাপারে আপনি নিজেই ভালো বুঝবেন। কেননা– আপনি যদি এক্সপার্ট হয়ে থাকেন কোন কাজে তাহলে ওই কাজটি সম্পর্কে কোন বিষয়গুলো উল্লেখ করলে বায়াররা আকৃষ্ট হতে পারে, আপনার পরিচিতি বাড়তে পারে এ সম্পর্কে মূলত আপনি নিজেই ভালো জানবেন। 

তবে হ্যাঁ, যদি কিছুটা আইডিয়া নিতে চান সেক্ষেত্রে আপ ওয়ার্ক ওয়েব সাইটে একজন মেম্বার হওয়ার পরবর্তীতে আপনি অন্য কোন প্রোফাইল ফলো করে নিজের প্রোফাইলটা সুন্দরভাবে সাজাতে পারেন। তবে আমি মনে করি আপনি নিজের প্রোফাইলটি নিজেই ভাল ডিজাইন করতে পারবেন, যেটা হবে প্রফেশনাল এবং আকর্ষণীয়। 

আপওয়ার্ক এ কাজ পাওয়ার উপায়

যারা নতুন নতুন আপ ওয়ার্ক একাউন্ট ক্রিয়েট করেছেন এবং এখনো পর্যন্ত একটিও কাজ আপওয়ার্ক এর মাধ্যমে সম্পাদন করতে পারেননি, তাদের মনে প্রশ্ন জাগে– আপনাকে কাজ পাওয়ার সহজ উপায় কি, আপওয়ার্কে কাজ পাওয়ার নিয়ম কি! 

দেখুন এটা যেহেতু পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা ফ্রান্স মার্কেটপ্লেস গুলোর মধ্যে একটি তাই এটা বুঝতে বাকি নেই যে– upwork এ মূলত দেশ-বিদেশের সকল বড় বড় ফ্রিল্যান্সার এবং বায়াররা অবস্থান করেন। আর একজন মানুষ মূলত কাজ করার মাধ্যমে ধীরে ধীরে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে এবং তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা হিসেবে কোন জিনিসকে উপস্থাপন করতে পারে। 

কিন্তু আপনি যদি আপনাকে একদমই নতুন হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার অভিজ্ঞতা হিসেবে কোন কিছুই দেখাতে পারবেন না। কিন্তু আপনি যে দক্ষ, আপনার যে কাজ করার এবিলিটি রয়েছে এটা মূলত একটি কাজ ডেলিভারি দেওয়ার মাধ্যমে বোঝাতে পারবেন। 

মূলত আপওয়ার্কে কাজ না পাওয়ার একটি কারণ হচ্ছে প্রোফাইল সুন্দর না হওয়া এবং আপনি কি কাজ পারেন আপনার দক্ষতার বিষয়বস্তু ভালোভাবে উল্লেখ না করা। আর তাই আমরা সাজেস্ট করব প্রথমত নিজের প্রোফাইলটি সুন্দরভাবে ডিজাইন করুন তৈরি করুন। আপনি যদি কোন কাজে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কাজ পাবেন। আর এটা শুধু আপ ওয়ার্ক নয়, যেকোনো বড় বড় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসেও। 

তবে হ্যাঁ, আপ ওয়ার্ক মার্কেটপ্লেসে মূলত যে সকল স্কিলের ওপর সবচেয়ে বেশি কাজ দেওয়া নেওয়া হয়ে থাকে সেই স্কিল গুলো হলো—

  • গ্রাফিক্স ডিজাইনার
  • ফ্রন্ট ইন্ড ডেভেলপার
  • গেম ডেভেলপার
  • ওএস ডেভেলপার
  • পিএইচপি ডেভেলপার
  • ডেটা এনালিটিক্স
  • ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট
  • অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার
  • বুককীপার
  • সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
  • ইউ এক্স ডিসাইনার
  • কনটেন্ট রাইটার
  • কপিরাইটার
  • ডাটাবেজ এডমিনিস্ট্রেটর
  • জাভা স্ক্রিপ্ট ডেভেলপার
  • লোগো ডিজাইনার
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
  • এসইও এক্সপার্ট
  • রিজিউম রাইটার
  • পাইথন ডেভলপার
  • মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপার
  • ইউ আই ডিজাইনার। 

অন্যদিকে ট্রেন্ডিং স্কিলস গুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • ফুল স্ট্র্যাক ডেভেলপার
  • আরডুইনো প্রগ্রামার
  • রুবি developers
  • ইমেইল মার্কেটিং
  • সুইফট ডেভেলপার্স
  • সিএসএস developer
  • স্মার্টশিট ফ্রিল্যান্সার্স
  • ব্যাক ঈন্ড ডেভেলপার
  • প্রজেক্ট ম্যানেজার
  • ঘোস্টরাইটার
  • বিজনেস কনসাল্টট্রেন্ট
  • ওয়েব ডেভেলপার্স
  • ইন্ট্রাকশনাল ডিজাইন
  • Html5 ডেভেলপার্স
  • গুগল এডওয়ার্ড এক্সপার্ট
  • ডিজিটাল মার্কেটারস সহ প্রভৃতি

আপওয়ার্ক এর মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম

আপ ওয়ার্ক এর মাধ্যমে মূলত অনলাইনে ইনকাম করা যায়। এ বিষয়টা তো আমাদের কাছে ইতিমধ্যে সুস্পষ্ট। তবে আপ ওয়ার্ক এ মূলত কিভাবে কাজ পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আরো কিছু বিষয় তুলে ধরব আলোচনার এই পর্যায়ে। 

অফ ওয়ার্ক ওয়েব সাইটে রয়েছে জব প্রপোজাল। এখানে মূলত একজন ব্যক্তির গিগ এবং প্রোফাইল এর ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন রকম জব অফার প্রদান করা হয়ে থাকে। আর এজন্য আপনাকে প্রথমত গিগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। এমনকি আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন জবে প্রপোজও করতে পারবেন। 

মনে করুন যদি কোন বায়ার আপনাকে জব অফার প্রদান করে থাকে সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় ধাপে আপনাকে ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলতে হবে অর্থাৎ ইন্টারভিউ দিতে হবে। কেননা ক্লায়েন্ট যদি আপনাকে উপযুক্ত মনে করেন তাহলে অতঃপর ইন্টারভিউ নেওয়ার মাধ্যমে প্রজেক্ট সম্পর্কে জানবেন এবং আপনিও ক্লায়েন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

মূলত ইন্টারভিউ বা কনভারসেশন পর্ব কমপ্লিট হওয়ার পরবর্তীতে আপনি কাজটি করার জন্য কনফার্ম করতে পারবেন অর্থাৎ অর্ডার অ্যাকসেপ্ট করবেন। অতঃপর কাজটি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ডেলিভার দেবেন। আর এভাবেই মূলত upwork এ যে কোন ক্যাটাগরির কাজ সম্পাদিত হয়ে থাকে। 

আপওয়ার্ক চাকরির বেতন

কেউ কেউ upwork চাকরির বেতন সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। দেখুন অনলাইনে ইনকাম করে কত টাকা ইনকাম করা যাবে এটা মূলত নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। কেননা অনলাইন ইনকাম মূলত বিভিন্ন ধরনের কাজের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন বেতন হয়ে থাকে। তবে এ পর্যায়ে আপনাকে ফ্রিল্যান্সাররা মোটামুটি কত টাকা আয় করে এ ব্যাপারে বার্ষিক বেতন উল্লেখ করার মাধ্যমে আমরা কিছুটা ধারণা প্রদান করার চেষ্টা করব। 

  • আপনি যদি একজন লেখক হিসেবে আপ ওয়ার্কে চাকরি করেন সেক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ ইউএস ডলার ইনকাম করতে পারবেন। যেটা বার্ষিক বেতন ৪২০০০ ডলার।
  • যদি আপনি একজন প্রোগ্রামার হিসেবে প্রতি ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ ইউএস ডলার গ্রহণ করে থাকেন সেক্ষেত্রে বার্ষিক বেতন হিসেবে ইনকাম করতে পারবেন ১ লাখ ২০ হাজার ডলার।
  • যদি আপনি মোবাইল ডেভেলপার হিসেবে আপনাকে চাকরি করেন সেক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় মোটামুটি ৫৫ থেকে ৬৫ ইউএস ডলার ইনকাম করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বার্ষিক বেতন দাঁড়াবে এক লক্ষ ডলার
  • যদি আপনি ডেটা বিশ্লেষক হিসেবে আপ ওয়ারকে কাজ করেন সেক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় পারিশ্রমিক হিসেবে পেতে পারেন ৫৫ থেকে ৬৫ ডলার এক্ষেত্রেও বার্ষিক বেতন দাঁড়াবে এক লক্ষ ডলার।

আপওয়ার্ক পেমেন্ট সিস্টেম

আপওয়ার্ক কাজের কথা বলতেই মূলত পেমেন্ট পদ্ধতির বিষয়টি উঠে আসে। দেখুন ইতিমধ্যে আমরা আপ ওয়ার্ক এ চাকরি করে মোটামুটি কত টাকা ইনকাম করা যায় এই ধারণাটি প্রদান করেছি। কিন্তু আলোচনার এ পর্যায়ে upwork পেমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে কিছু কথা উল্লেখ করব। 

মূলত আপু ওয়ার্কের ফ্রিল্যান্সাররা বিভিন্ন ভাবে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারে। তবে upwork মূলত নিম্নলিখিত পেমেন্ট পদ্ধতি সর্বদা সমর্থন করে। সেগুলো হলো—

  • Paypal
  • Payoneer

নতুনদের জন্য আপওয়ার্ক চাকরি সম্পর্কে টিপস

তো পাঠক বন্ধুরা, নতুনদের জন্য upwork চাকরি সম্পর্কিত আলোচনার ইতি টানছি এখানেই। তবে আলোচনার শেষ পর্যায়ে কয়েকটি বিষয়ে অবসরের মাথায় রাখবেন। আপনি যদি আপ ওয়ার্ক এ প্রফেশনালি কাজ করতে চান সেক্ষেত্রে–

  • প্রথমত নিজের স্কিল ডেভেলপ করুন
  • যেকোনো একটা বিষয়ে নিজেকে এক্সপার্ট হিসেবে গড়ে তুলুন
  • যে কাজের প্রতি অধিক বেশি আগ্রহ সেটাকে কেন্দ্র করে এগিয়ে চলুন
  • অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে নতুনত্ব ধারণা অর্জন করুন
  • সৃজনশীল মন মানসিকতা গড়ে তুলুন এবং এনালাইসিস করুন প্রচুর
  • নিজেকে শেখান এবং নতুন কিছুর সাথে পরিচয় করান সেই সাথে যা জানেন তার থেকে অধিক বেশি জানার চেষ্টা করুন।

তো সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর যদি অনলাইন ইনকাম এবং এ ধরনের প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য আর্টিকেল পড়তে পারেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেয়ারও করতে পারেন। তো সবাইকে আল্লাহ হাফেজ। 

Facebook Comments

Leave a Reply

Top