You are here
Home > জরুরী টিপস > মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়: আমাদের দৈন্দদিন দিনে ব্যবহারের জন্য মোবাইল ফোন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ডিভাইস হলেও এর বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। মোবাইল ফোন আমাদের দৈন্দদিন কাজের মধ্যে, কল করা, এসএমএস করা, ইমেইল করা সহ বিভিন্ন কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। শুধুমাত্র কল করা কিংবা ইমেইল করার কাজেই নয় বরং আরও অনেক কাজ রয়েছে যেখানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়।

যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো বেশ অনেক প্রয়োজনীয় কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হলেও এর বেশ কিছু ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে। আর তাই আমাদের আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় গুলো। কেননা বর্তমানে আমরা কমবেশি সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করি কিন্তু, আমাদের মধ্যে অনেকেই মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় গুলো জানি না। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় গুলো সম্পর্কে।

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়

এই আর্টিকেল থেকে যা যা জানতে পারবেন,

  • মোবাইল ফোন কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে। 
  • অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলাফল।
  • মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের যে ক্ষতি হতে পারে। 
  • মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক। 
  • মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়। 
  • শেষকথা । 

মোবাইল ফোন কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে

দিনের কোনো না কোনো সময় আমরা মোবাইল ফোন অবশ্যই ব্যবহার করি। মোবাইল ফোন আমাদের সবার জীবনের সাথে অনেকটা অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। অনেকেই আছে যাদের কিনা মোবাইল ছাড়া এক মুহূর্ত ও চলে না। মোবাইল ফোন নানানভাবেই আমাদের ক্ষতি করে। এর মধ্যে বেশ কিছু দিক রয়েছে যা উল্লেখযোগ্য। চলুন এবার জেনে নেই মোবাইল ফোন কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে।

যেহেতু আমরা সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করি এবং মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত তাই মোবাইল ফোন কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে সেগুলো আমাদের সবারই জানা উচিৎ। কারণ মোবাইল ফোন আমাদের শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ক্ষতি করেই যাচ্ছে। আমরা যদি এখন থেকে সচেতন না হতে পারি তাহলে সবদিকেই সমস্যার সৃষ্টি হবে প্রকট। আর এ কারণেই আমাদের কে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে।

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলাফল

মোবাইল ফোন ব্যবহারের যে সুবিধা রয়েছে বা মোবাইল ফোন আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা কে যতটা সহজ করে তুলেছে অন্যদিকে একইভাবে আমাদের ক্ষতি ও করছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলাফল গুলো।

অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে চোখের ক্ষতি হয়। অনেকেই রাত জেগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। এতে করে ঘুমের ও ক্ষতি হয়। শুধুমাত্র চোখ ও ঘুম নয় ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়াতেও মোবাইল ফোন কে দায়ী করা হয়। মিথ্যা প্রতিভা ও দৃষ্টি সমস্যা ও হতে পারে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলাফল হিসেবে।

মোবাইল ফোন ব্যবহারে শিশুদের যে ক্ষতি হতে পারে

মোবাইল ফোন শুধুমাত্র প্রাপ্ত বয়স্ক নয় শিশুরাও ব্যবহার করে। প্রাপ্ত বয়স্কদের থেকেও মোবাইল ব্যবহারে বেশি ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। কারণ বেশিরভাগ শিশুরা অকারণে মোবাইলে গেমস অ কার্টুন দেখে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে যায়। একই সাথে মোবাইলে আসক্ত হওয়ার ফলে শিশুদের মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যা শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়ায়।

শারীরিক, মানসিক, আর্থিক সহ মোবাইল ফোন আমাদের আরও অনেক ক্ষতি করে। নিচে তারই একটি ছোট নিম্নরূপ প্রকাশ করা হলো।

  • পড়াশোনার ক্ষতি করে।
  • চোখের ক্ষতি করে।
  • ঘুমের ক্ষতি করে।
  • সময় অপচয় বৃদ্ধি পায়।
  • আর্থিক ক্ষতি করে।
  • চিন্তাশক্তি লোপ পায়।
  • শারীরিক ক্ষতি করে।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক

শারীরিক, মানসিক, আর্থিক সহ মোবাইল ফোন আমাদের আরও অনেক ক্ষতি করে। নিচে তারই একটি ছোট নিম্নরূপ প্রকাশ করা হলো।

সময় অপচয় : অতিরিক্ত সময় মোবাইল ব্যবহারের ফলে আমাদের অনেকগুলো সময় অপচয় হয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দিনের অনেকটা সময় আমরা অপচয় করি ছোটো একটি যন্ত্রের সাথে। অনেকেই অযথা সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে নানান ধরনের ভিডিও দেখে ও অনেক সময় অনেকেই গেমস এর প্রতি আসক্ত হয়ে গেমস খেলে মূল্যবান সময় নষ্ট করে।

পড়াশোনার ক্ষতি : পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত সময় হলো ছোটবেলা। আর ছোট সময় থেকে যদি পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আস্তে আস্তে পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। মোবাইলে অনলাইন বা অফলাইন গেমস খেলে ছোটোরা সহজেই আসক্ত হয়ে যায়। যার ফলে দিনের অনেক মূল্যবান একটা সময় তারা অনলাইন বা অফলাইন গেমস ও কার্টুন বা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার কর এ-নষ্ট করে।

ঘুমের ক্ষতি : অনেকেই রাত জেগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া তে ভিডিও দেখে সময় নষ্ট করে। ফেসবুকিং, ভিডিও দেখা বা অন্যান্য কাজে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা বা অনলাইন গেমস খেলে সময়  নষ্ট করে রাত জাগার ফলে এটি একটি খারাপ অভ্যাসে পরিণত হয়। একইসাথে রাত জাগা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ঘুমের ক্ষতি হয়।

চোখের ক্ষতি : অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে মোবাইল আলো আমাদের চোখের মারাত্মক ক্ষতি করে । যার ফলে মাঝে মাঝে চোখ জালাপোড়া ও করতে থাকে। একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে যে শতকরা ৮৩ শতাংশ মোবাইল ফোনে দৃষ্টি সিনড্রোম পাওয়া যায়। যা আমাদের চোখের মারাত্মক ক্ষতি করে এবং অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে স্ট্রেস, লেন্স, বিবর্ণ দৃষ্টি জ্বলন্ত সংবেদন ও শুল্ক চোখ ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হয়।

আর্থিক ক্ষতি : মোবাইল ফোন শুধু শারীরিক বা মানসিক নয় বরং আর্থিক ভাবেও ক্ষতি করে। কেননা আপনি যদি শুধুমাত্র ভিডিও অথবা অনলাইন গেমস খেলতে চান তাহলে আপনাকে বিভিন্ন মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনতে হবে। আর এভাবেই আপনাকে গুনতে হয় বেশ কিছু অর্থ। যা মাস শেষে হিসেব করলে বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে।

চিন্তাশক্তি লোপ পাওয়া : যেহেতু মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে আমোদের  চিন্তাশক্তি একদিকে প্রবাহিত হয় এবং চিন্তাশক্তি বিকশিত হতে পারে না। সেহেতু আমরা ধীরে ধীরে সৃষ্টিধর্মী কাজ করার সক্ষমতা হারাতে থাকি। তাই আমাদের চিন্তাশক্তি লোপ পায়।

 শারীরিক ক্ষতি : দীর্ঘ সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের  ফলে আমদের নানান রকম শারীরিক ক্ষতি হতে পারে। যেমন দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে চোখ, কানের সমস্যা সহ মাথা অ ঘার ব্যথা ও হতে পারে। আর আস্তে আস্তে এটি বড় ধরনের আকার ধারণ করতে থাকে এবং ছোট  ছোট বিভিন্ন সমস্যা থেকে বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে থাকে। আর এভাবেই বাড়তে থাকে আমাদের শারীরিক অসুবিধা।

মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়

প্রিয় পাঠক, আপনারা এতক্ষণ জেনে নিলেন মোবাইল  ফোন ব্যবহারের নানান রকম ক্ষতিকর দিক এবং মোবাইল ফোন কিভাবে আমাদের ক্ষতি করছে ইত্যাদি। চলুন এবার তাহলে জেনে নেওয়া যাক মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায়।

যেহেতু মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত এবং আমরা বিভিন্ন কাজে মোবাইল ফোন কে ব্যবহার করি। সেহেতু অবশ্যই মোবাইল ফোনের ব্যবহার এবং এর ভালো ও খারাপ দিক গুলো আমাদের জানা প্রয়োজন। একই সাথে জানা প্রয়োজন  মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় গুলো সম্পর্কে।

১। মোবাইল ফোনে কল রিসিভড করার পর যতটা সম্ভব ফোন কানের কাছাকাছি রাখুন। তবে কথা বলার সময় সম্ভব হলে ইয়ার-ফোন ব্যবহার করুন। এতে করে রেডিয়েশন থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে।

২। মোবাইলে কথা বলার সময় হাহাহাটি করা বন্ধ করুন। দুর্বল নেটওয়ার্ক –এ রেডিয়েশন অনেক বেশি নির্গত হয় । যথাসম্ভব এ সময় কথা সংক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করুন।

৩। গাড়িতে থাকা অবস্থায় কথা বলা সীমিত করার চেষ্টা করুন। কেননা গাড়িতে থাকা রেডিয়েশন শিল্ড মোবাইলের রেডিয়েশন মাত্রা আরও বাড়ীয়ে তোল।

৪। সময় মত জেগে উঠার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন নয় বরং ঘড়িতে অ্যালার্ম সেট করুন।

৫। অন্ধকারে মোবাইল স্ক্রিনের আলো শুধুমাত্র চোখের ক্ষতি করে না বরং ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন নিঃসরণে বাধার সৃষ্টি করে। রাতে ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘন্টা আগে মোবাইল ব্যবহার করুন।

৬। স্মার্টফোনের বিভিন্ন সার্ভিস যেমন, ওয়াইফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, ইন্টারনেট ইত্যাদি সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখুন। কেননা এগুলোর রেডিয়েশন দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে পারে।

৭। শোবার ঘরে রাউতার ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। একইসাথে মোবাইল নেটওয়ার্ক তাওয়ার থেকে যতটা দূরে সম্ভব বাসা তৈরি করুন।

টিপসঃ নিজ বাসভবনে মোবাইল নেটওয়ার্ক টাওয়ার স্থাপন করতে দেবেন না। এতে করে সামান্য আপনার সামান্য কিছু আর্থিক ক্ষতি হলেও রক্ষা পাবে আপনার এবং আপনার আশেপাশের পরিবারের অমূল্য স্বাস্থ্য।

আমাদের শেষকথা

প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। কেমন লাগলো আমাদের আজকের আয়োজন মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক থেকে বাঁচার উপায় এই লেখাটি? আশা করি আপনারা বরাবরের মতই এই লেখাটি ও পছন্দ করবেন। পরবর্তী কোন বিষয়ে জানতে চান কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।  

Facebook Comments

Leave a Reply

Top